কেশিয়াড়ির জখম ছাত্রকে সাহায্য কলেজের

বাসের ধাক্কায় সাইকেল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। তাঁর ডান হাতের কনুইয়ের উপর দিয়ে চলে গিয়েছিল বাস। রাস্তায় পড়ে কাতরাতে দেখে স্থানীয়রাই বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাপস দে’কে হাসপাতালে ভর্তি করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০০:৪০
Share:

বাসের ধাক্কায় সাইকেল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। তাঁর ডান হাতের কনুইয়ের উপর দিয়ে চলে গিয়েছিল বাস। রাস্তায় পড়ে কাতরাতে দেখে স্থানীয়রাই বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাপস দে’কে হাসপাতালে ভর্তি করে। দুঃস্থ মেধাবী ছাত্র তাপসের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল মেদিনীপুর গোপ কলেজ। গত ১৬ মার্চ এই কলেজেরই ভাড়া করা বাসের ধাক্কায় জখম হন তাপস।

Advertisement

চিকিৎসার বিপুল খরচ সামলাতে তাপসের পরিজনেদের হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। গোপ কলেজের অধ্যক্ষা জয়শ্রী লাহা বলছেন, “বাসটি সরাসরি কলেজের ছিল না। কলেজের ভাড়া করা বাস ছিল। তাও আমাদের মনে হয়েছে, ওই ছাত্রের পাশে দাঁড়ানো জরুরি। যতটুকু পাশে থাকা যায় সেই চেষ্টাই করা হয়েছে।”

চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। তাপসের প্লাস্টিক সার্জারি প্রয়োজন। এ জন্য দরকার আরও টাকা। গোপ কলেজের এক শিক্ষিকা বলছিলেন, “প্লাস্টিক সার্জারির খরচ কী তা আমরা জানি। আমরা জানি যে বিপুল পরিমাণ টাকা ওর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন, তুলনায় যা সাহায্য করা হয়েছে তার পরিমাণ খুবই কম। আমরা শুধু পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।”

Advertisement

গত ১৬ মার্চ বিকেলে তাঁতিগেড়িয়া লেভেল ক্রসিংয়ের অদূরেই ঘটনাটি ঘটে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র কেশিয়াড়ির বাসিন্দা তাপস মেদিনীপুরের এক হস্টেলে থাকেন। স্নাতকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইতিহাসে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিলেন। ঘটনার দিন বিকেলে সাইকেলে তাঁতিগেড়িয়ার দিক থেকে অশোকনগরের দিকে আসছিলেন তাপস। একই দিকে আসছিল রাজা নরেন্দ্রলাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের (গোপ কলেজ) বাসটি। ওভারটেক করতে গিয়ে বাসটি তাপসকে ধাক্কা মারে।

বাসের ধাক্কায় সাইকেল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিনি। এরপর বাস তাপসের ডান হাতের কনুইয়ের উপর দিয়ে চলে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই তাঁকে কলকাতার এনআরএসে স্থানান্তর করা হয়।

তাপসের বাবা তপনবাবুর সামান্য জমি রয়েছে। সেই জমি চষেই সংসার চলে। ওই দুর্ঘটনার খবরে আচমকাই যেন তাঁদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তপনবাবু বলছিলেন, “কলেজকে এ ভাবে পাশে দাঁড়াতে দেখে মনে জোর পাচ্ছি।” বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের এজিএস প্রসেনজিৎ বেরা বলেন, “আমরাও সাধ্য মতো তাপসের পাশে থাকব।” তাপস বলছিলেন, “গত মাসেই দুর্ঘটনায় পড়েছিলাম। কলেজের বাসের ধাক্কায় গুরুতর জখম হয়েছি। তবে কলেজ এ ভাবে পাশে এসে দাঁড়াবে ভাবতে পারিনি। আমি কৃতজ্ঞ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন