ফাইল চিত্র।
কোটি কোটি টাকা খরচ করে মেদিনীপুর মেডিক্যালে বসানো হয়েছে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। যদিও এই যন্ত্র ব্যবহারের পদ্ধতিই জানা নেই কারও। যন্ত্র কী ভাবে কাজ করে তা জানাতে হয়নি কোনও প্রশিক্ষণও। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে আগুন লাগলে দমকল আসা পর্যন্ত হাত গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া কোনও উপায় নেই।
মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের এক নার্সিংহোমে গত মঙ্গলবারই আগুন লাগে। কোনওক্রমে জানলার কাচ ভেঙে উদ্ধার করা হয় রোগীদের। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও একাধিকবার আগুন লেগেছে। দিন কয়েক আগে মেদিনীপুর শহরের এক নার্সিংহোমেও আগুন লাগে। প্রতিবারই বড় ক্ষতি এড়ানো গেলেও এর থেকে শিক্ষা নেয়নি স্বাস্থ্য দফতর। এর প্রমাণ, শুধু মেডিক্যাল নয়, জেলার তিন সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল শালবনি, ডেবরা ও ঘাটালেও শুধু অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রেখেই দায় সারা হয়েছে।
মাস কয়েক আগে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিভিন্ন ভবনেও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র বসানো হয়েছে। যদিও এই যন্ত্র কী ভাবে চালু করতে হয়, ব্যবহারের নিয়মই বা কী তা জানেন না মেডিক্যালের কর্মীরাই। কেন অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহার শেখাতে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি? মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুর জবাব, “এ বার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” মেডিক্যালের এক কর্তার কথায়, “সিলিন্ডারগুলো পূর্ত দফতর বসিয়েছে। ওই দফতরই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে।”
৬৬০ শয্যার মেডিক্যালে গড়ে রোগী ভর্তি থাকেন ৭৫০-৮০০ জন। বহির্বিভাগেও প্রতি মাসে কয়েক হাজার রোগী আসেন। জেলার এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল চত্বরে চারিদিকে ছড়িয়ে থাকে দাহ্যবস্তু। অনেক বাড়ির বেসমেন্টেও আবর্জনার স্তূপ। এই দাহ্যবস্তুতে আগুন লাগলে তা ভয়াবহ আকার নিতে পারে। হাসপাতালের এক কর্তাও মানছেন, “মেদিনীপুর মেডিক্যালের মতো এত বড় হাসপাতালে আগুন লাগলে ক্ষতি অনিবার্য। প্রচুর মানুষ এখানে থাকেন। সকলে তড়িঘড়ি ওয়ার্ড থেকে বেরতো পারবেন না।”
জেলার অধিকাংশ বেসরকারি নার্সিংহোমগুলির হালও কমবেশি একই। বাদ নেই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালও। কোথাও নাম কা-ওয়াস্তে মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রই লাগিয়ে রাখা হয়েছে, আবার কোথাও যন্ত্র রয়েছে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। শালবনির বিএমওএইচ অভিষেক মিদ্যা বলছেন, “একটি কোম্পানি সুপার স্পেশালিটি ভবনের দেখভাল করে। তাঁরাই সব দেখেন। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে ভালই হয়।”