মাসখানেক আগে ভাদুতলায় পথ দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জন্য রক্ত জোগাড় করতে শিবির করতে বয়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যালে। এক সপ্তাহ থানাস্তরে রক্তদান শিবির থেকে প্রায় এক হাজার ইউনিট রক্ত সংগ্রহের পর অবশ্য সঙ্কটের সেই ছবিটা অনেকটাই বদলেছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের মত।
পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার কথায়, “এখন আর জেলায় রক্তের সঙ্কট নেই। থানাস্তরে আয়োজিত শিবিরে বিপুল সাড়া মিলেছে। গড়ে ৫০ ইউনিট করে রক্ত সংগ্রহ হয়েছে। আগামী দিনে আরও শিবির হবে।” থানাস্তরে প্রথম পর্যায়ে শিবিরের পরে অনেকটা স্বস্তিতে জেলা। গিরীশচন্দ্রবাবু মানছেন, “গত মাসে রক্তের সঙ্কট ছিল। তবে এই শিবিরগুলোর পরে সেই সঙ্কট দূর হয়েছে।”
বিগত এক সপ্তাহে থানাস্তরের শিবির থেকে ঠিক কত ইউনিট রক্ত সংগ্রহ হয়েছে? জেলা স্বাস্থ্য ভবনের এক সূত্রে খবর, সবমিলিয়ে ৯৩৩ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ হয়েছে। যেমন, বেলদা থানার শিবিরে ৬০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ হয়েছে, গড়বেতা থানার শিবিরে ৫৭ ইউনিট, শালবনি থানার শিবিরে ৫৫ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ হয়েছে।
বস্তুত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ঠিক করেছিল, চলতি মাসের ২০ থেকে ২৬ তারিখ রাজ্যের প্রতিটি থানায় একটি করে রক্তদান শিবির করা হবে। পাশে থাকবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন। পরে ২৭ মে থেকে ৭ জুন পর্যন্ত রাজ্যের প্রতি পুরসভাও রক্তদান শিবিরের আয়োজন করবে। সেই মতো পশ্চিম মেদিনীপুরে শিবির হয়।
প্রথম পর্যায়ে সাত দিনে জেলার ১৭টি থানায় শিবির হয়েছে। এর মধ্যে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক রক্ত সংগ্রহ করে ৬টি শিবির থেকে। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক রক্ত সংগ্রহ করে ৬টি শিবির থেকে। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক রক্ত সংগ্রহ করে ৫টি শিবির থেকে।
জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলছিলেন, “থানার শিবির থেকে গড়ে ৫০ ইউনিট রক্ত পাওয়ার আশা ছিল। তাই হয়েছে। এই গরমে রক্তদাতাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেই দিকে বিশেষ নজরও রাখা হয়েছিল। বিশেষ করে ডিহাইড্রেশন জনিত সমস্যা এড়াতে কিছু শিবির সন্ধ্যায় কিংবা বাতানুকূল ঘরে হয়েছে।”
সংগ্রহ হওয়া রক্ত মজুত রাখার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হচ্ছে না? রবীন্দ্রনাথবাবুর কথায়, “জেলায় রক্ত মজুত রাখার পরিকাঠামোগত কোনও সমস্যা নেই। মেদিনীপুর মেডিক্যালে বড় ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। রক্ত যাতে কোনও ভাবে নষ্ট না হয় সেই দিকটি গুরুত্ব দিয়েই দেখা হয়েছে।”