ছাল তুলে দেদার গাছ ‘খুন’ বন্দর আবাসনে

স্থানীয় সূত্রের খবর, হলদিয়া সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড যাওয়ার পথে মেডিকো যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের কাছে বন্দর প্রশাসনের জায়গায় ওই গাছগুলি লাগানো হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৯ ০০:২০
Share:

নিজস্ব চিত্র।

দিনে বা রাতে প্রকাশ্যে গাছ কাটা নিয়ে হলদিয়ায় আগেও বহু অভিযোগ উঠেছে। এবার ‘অভিনব’ পদ্ধতিতে গাছ মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল শিল্প শহরে। স্থানীয়দের দাবি, গাছের ছাল তুলে হলদিয়া বন্দর আবাসনের ক্লাস্টার নাইন এলাকায় মেরে ফেলা হচ্ছে একাধিক শিরিষ গাছ।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, হলদিয়া সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড যাওয়ার পথে মেডিকো যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের কাছে বন্দর প্রশাসনের জায়গায় ওই গাছগুলি লাগানো হয়েছিল। সেখানে শিরিষ ছাড়াও পলাশ, বটল ব্রাশ-সহ নানা প্রজাতির গাছ রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ১০টির বেশি গাছের চাল তুলে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।

হলদিয়া সেন্টিনারি পার্কের কাছে ওই শিরিষের জঙ্গল রাস্তা থেকে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ মাইতি বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে আমার বাড়ির উল্টো দিকেই কিছু মানুষ এসে ওই সব গাছের চাল কেটে নিচ্ছিলেন। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ওরা মারমুখী ছিল।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, “এভাবে নিয়মিত গাছের ছাল গভীর ভাবে কেটে দেওয়া হচ্ছে। গাছগুলি মরে গেলে প্রকাশ্যে কাটা হবে বলে জানাচ্ছে ওরা।’’

Advertisement

কিন্তু গাছের ছাল কাটলে কি গাছ মরে যাবে? এ ব্যাপারে অবসরপ্রাপ্ত এক বন আধিকারিক সমীর মজুমদার বলেন, ‘‘যে সব গাছের জাইলেম, ফ্লোয়েম গাছের ছালে থাকে, সেগুলির ছাল গভীরভাবে কেটে ফেললে তারা ধীরে ধীরে মরে যাবে। শিরিষও ওই ধরনেরই গাছ।’’ গাছ মারা ঘটনায় সরব হয়েছেন পরিবেশ কর্মীরা। স্থানীয় বাসিন্দা তথা পরিবেশ কর্মী রাধাবিনোদ দাস বলেন, ‘‘স্থানীয় স্তরে সমস্ত প্রশাসনিক জায়গায় জানিয়েছি। কেউ গুরুত্ব দেননি। শুধু ছাল চাড়িয়ে নয়, গাছের নীচে প্লাস্টিক পুড়িয়েও গাছ মারা হচ্ছে।’’

হলদিয়া বিজ্ঞান পরিষদের সভাপতি রায়পদ কর গাছ মারা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, গভীরভাবে গাছের ছাল তুলে নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে গাছ আর কাণ্ডে জল ও খনিজ লবণ সংবহণ করতে পারছে না। ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান, ওই একই কায়দায় হলদিয়ার বালুঘাটায় শয়ে শয়ে ঝাউ গাছে ছাল তুলে এবং ওষুধ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। পরে সেগুলি মরে গিয়েছে অজুহাত দিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে।

চোখের সামনে শিল্প শহরে সবুজের পরিমাণ কমে যাচ্ছে, গাছ মারা হচ্ছে, বন দফতর কি কোনও পদক্ষেপ করছে না? এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুরের ডিএফও স্বাগতা দাস বলেন, ‘‘যেহেতু বন্দরের জায়গায় রয়েছে, তাই আমাদের কিছু করার নেই। বন্দরকেই অভিযোগ দায়ের করতে হবে।’’ গাছ মারা প্রসঙ্গে হলদিয়া বন্দরের প্রশাসনিক ম্যানেজার অমল দত্ত বলেন, ‘‘অবিলম্বে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে এর পিছনে কারা রয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন