নোট তর্কে উত্তাল কলেজের নকল সংসদ

নোট বিতর্কে উত্তাল সংসদ উত্তাল! দিল্লিতে না থেকেও সেই উত্তেজনা টের পেল মেদিনীপুর কমার্স কলেজের পড়ুয়ারা। কী ভাবে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৬ ০১:১৬
Share:

কমার্স কলেজে যুব সংসদ প্রতিযোগিতা। —নিজস্ব চিত্র।

নোট বিতর্কে উত্তাল সংসদ উত্তাল! দিল্লিতে না থেকেও সেই উত্তেজনা টের পেল মেদিনীপুর কমার্স কলেজের পড়ুয়ারা। কী ভাবে? যুব সংসদ প্রতিযোগিতায় আয়োজিত নকল সংসদে নোট বাতিল বিতর্কের মাঝেই ফ্লোরে নেমে এলেন বিরোধী দলনেতা! অবস্থা সামাল দিলেন অধ্যক্ষ! বুধবার থেকে দু’দিনের যুব সংসদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে মেদিনীপুর কমার্স কলেজে। বৃহস্পতিবারই ছিল শেষ দিন।

Advertisement

প্রতিযোগিতায় সবমিলিয়ে ১৪টি কলেজ যোগ দেয়। এক- একটি কলেজ নকল সংসদ বসায়। সেখানে যেমন শাসক-শিবিরের সদস্য ছিলেন, তেমনই ছিলেন বিরোধী-শিবিরের সদস্যরাও। ছিলেন সংসদের অধ্যক্ষও। অধ্যক্ষই সভা পরিচালনা করেন। ঠিক যেমন বিধানসভা, লোকসভায় হয়। কোনও কলেজ নকল বিধানসভা বসায়, কোনও কলেজ নকল লোকসভা বসায়। লোকসভায় দেশের সাম্প্রতিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বিধানসভায় আলোচনা হয় রাজ্যের নানা বিষয়ে।

বুধবার মেদিনীপুর কলেজ যেমন নকল লোকসভা বসিয়ে ছিল। বৃহস্পতিবার কমার্স কলেজ, হিজলি কলেজের মতো কলেজ নকল বিধানসভা বসায়। মেদিনীপুর কলেজের নকল সংসদে নোট বাতিলের বিষয়টি উঠে আসে। শাসক-বিরোধী চাপানউতোরে সংসদ উত্তালও হয়! বিরোধী দলনেতার ভূমিকায় ছিলেন তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সুমন শী। সুমন প্রশ্ন করেন, ‘কালো টাকা উদ্ধারে এটাই কি সঠিক পদক্ষেপ? নোট বাতিলের ফলে কত শতাংশ কালো টাকা উদ্ধার হবে? বরং এই সিদ্ধান্তে মানুষ চূড়ান্ত অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন।’ নোট তর্কে সরকারপক্ষকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করে বিরোধীপক্ষ। বিরোধীপক্ষ দাবি করে, মানুষের দুর্ভোগ বোঝার চেষ্টা করছে না সরকার! এক সময় ফ্লোরে নেমে আসেন বিরোধী দলনেতা। বিরোধী-শিবিরের অন্য নেতারাও তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে সরব হন।

Advertisement


জয়ী মেদিনীপুর কলেজের পড়ুয়াদের পুরস্কার দিচ্ছেন মানস ভুঁইয়া।

এই দাবি অবশ্য খারিজ করে দেয় সরকারপক্ষ। প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় ছিলেন তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বুদ্ধদেব দাস। জবাবি ভাষণে বুদ্ধদেব বলেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে সরকার বদ্ধপরিকর। এর জন্য যা যা করার সরকার তাই করবে। নোট বাতিল এরই প্রথম পদক্ষেপ।” তিনি দাবি করেন, ‘সাধারণ মানুষের তেমন কোনও সমস্যা হচ্ছে না। হলেও তাঁরা দেশের স্বার্থে তা মেনে নিচ্ছেন। কেউ কেউ শুধু রাজনীতি করার জন্য গরিব মানুষের দোহাই দিচ্ছেন।” দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে বিরোধীপক্ষকে সহযোগিতা করার আর্জিও জানান বুদ্ধদেব।

মেদিনীপুর কলেজের শিক্ষক প্রশান্তকুমার রায় বলছিলেন, “এখন দেশের সবথেকে বড় আলোচনার বিষয় তো এটাই। নকল সংসদে এ নিয়ে আলোচনা হবে না তা হয় না কি!” মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরাও বলেন, “নোট তর্কে সংসদে সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করবে বিরোধীরা, সরকার তার জবাব দেবে, এটাই তো স্বাভাবিক। সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোই তো নকল সংসদে উঠে আসে।” কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ দুলালচন্দ্র দাসের কথায়, “নকল সংসদে নোট বিতর্ক নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এখন এটা তো একটা বড় বিষয়। এই বিষয় নিয়ে নকল সংসদে আলোচনা হবে না তা হয় না কি!” বিতর্কের মাঝেই নকল সংসদে মাঝে মধ্যেই শোরগোল ওঠে। কখনও শোনা যায়, ‘মানছি না, মানব না’, কখনও শোনা যায়, ‘জবাব চাই, জবাব দাও’। ঠিক যেমন বিধানসভা, লোকসভায় হয়ে থাকে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন