হাতের কাজের জোরেই পুলওয়ামার নিহত জওয়ানদের পাশে

মেলার থিম সমাজ সচেতনতা এবং পরিবেশ বান্ধব বার্তা। মেলা কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, রাজ্যের দুই নিহত জওয়ানের হাতে মেলার থেকে উপার্জিত অর্থ তুলে দেওয়া হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভগবানপুর শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯ ০০:২১
Share:

মেলায় চলছে বিক্রিবাটা। ভগবানপুরে। নিজস্ব চিত্র

দেশ, বিদেশের শিল্প সম্ভার নিয়ে একটি মেলা। দেখতে আর পাঁচটা প্রদর্শনীর মতোই। কিন্তু ওই মেলা আয়োজনের পিছনে রয়েছে একটি মহৎ উদ্দেশ্য। মেলা থেকে উপার্জিত অর্থ দেওয়া হবে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় নিহত রাজ্যের দুই জওয়ানের পরিবারকে।

Advertisement

শনিবার এগরা মহকুমার ভগবানপুরের যাদবপুকুর ফুটবল মাঠে দু’দিনের চিত্র এবং চারুশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। আয়োজক সংস্থার ভগবানপুর শাখার তরফে জানানা হয়েছে, রাজ্য চারুকলা পর্ষদ থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত নামী শিল্পী-সহ নেপাল, ভূটান, তাইল্যান্ড-সহ একাধিক দেশের শিল্পীদের বিভিন্ন শিল্পকর্ম মেলায় আনা হয়েছে। দু’দিনের ওই মেলার শুরুতে এ দিন যাদবপুকুর ফুটবল মাঠ থেকে একটি শোভাযাত্রা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণে তৈরি শহিদ বেদিতে পর্যন্ত যায়। সেখানে শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান আয়োজক সংস্থার প্রতিনিধিরা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পরোভাগেই ছিলেন ভগবানপুর এলাকার থাকা ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত ৫০ জন জওয়ানের পরিবারের সদস্যেরা। সেনার পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের হাতেই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।

এ দিন মেলায় গিয়ে দেখা গেল, ২৫০ ফুটের গ্যালারিতে শুধু শিল্পীদের কারুকার্য। দেশ ও বিদেশের ১০০ জন নামী চিত্র এবং চারুশিল্পীর হস্তকলা রয়েছে মেলায়। তাঁদের আঁকা ওয়েল পেন্টিং, ওয়াটার কালার প্রিন্ট, পেনসিল স্কেচ দর্শকদের আকর্ষিত করছে। রাজ্য চারুকলা পর্ষদের পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী মনোজ সামন্তের একাধিক শিল্পকলা মেলার আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু। কলকাতার শিল্পী প্রশান্তকুমার বসু নিজেই মেলায় তাঁর শিল্পকর্ম নিয়ে এসেছেন। মেলায় ক্রেতাদের পছন্দের চিত্র পাওয়ার জন্য অভিনব ব্যবস্থা রয়েছে। ক্রেতাদের সামনেই শিল্পীরা রংতুলির টানে ফুটিয়ে তুলছেন তাঁদের পছন্দের চিত্র। আর তা কিনছেন দর্শকেরা।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

মেলার থিম সমাজ সচেতনতা এবং পরিবেশ বান্ধব বার্তা। মেলা কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, রাজ্যের দুই নিহত জওয়ানের হাতে মেলার থেকে উপার্জিত অর্থ তুলে দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামায় সিআরপিএফের কনভয়ে জঙ্গি হানায় নিহত হয়েছিলেন ৪৪ জন জওয়ান। তাঁদের মধ্যে ছিলেন হাওড়ার বাসিন্দা বাবলু সাঁতরা এবং নদীয়ার তেহট্টের বাসিন্দা সুদীপ বিশ্বাস। তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতে মেলার সামনেও আর্ট পেপারে মূর্তি বানানো হয়েছে।

চিত্র এবং চারুশিল্প মেলার আয়োজক সংস্থার সম্পাদক তথা শিল্পী বিষ্ণু মাইতি বলেন, ‘‘শহিদ সেনা পরিবারের পাশে থাকতে নিজেদের শিল্পকলাই একমাত্র হাতিয়ার শিল্পীদের। সারা দেশের মতো চিত্র এবং কারুশিল্পীরাও যে সেনাবাহিনীর পাশে রয়েছেন, তার বার্তা দিতেই আমাদের এই মেলা। এখান থেকে উপার্জিত অর্থ রাজ্যের নিহত দুই জওয়ানের পরিবারকে হবে।

শিল্পকর্ম কেনার পাশাপাশি মেলা বসানোর উদ্দ্যেশেও খুশি ক্রেতার। কাবেরী সামন্ত নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘‘ছবিগুলি খুবই চিত্তাকর্ষক। একটা ছবি কিনেছি। শিল্পীদের এই ভাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাশে থাকার বার্তা অভিনব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন