দিঘায় হনুমানের হানা, আক্রান্ত মহিলা পর্যটক

হাসপাতাল সূত্রের খবর, গলার ক্ষত বেশ গভীর। তবে শ্বাসনালী পর্যন্ত ক্ষত পৌঁছয়নি। না হলে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারত। আপাতত তিনি বিপণ্মুক্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:৫১
Share:

জখম: স্টেট জেনারেলে পূর্ণিমাদেবী। নিজস্ব চিত্র

চায়ের দোকানের পাশে এসে বসেছিল হনুমানটি। দক্ষিণেশ্বরের হনুমানের মতো ভেবে হাতে বাদাম নিয়ে খেতে দিয়েছিলেন পূর্ণিমা চন্দ। কিন্তু বাদাম শেষ করেও নড়তে চায়নি হনুমান। চা খাচ্ছিলেন পূর্ণিমাদেবী। আচমকাই তাঁর গলার নলি চেপে ধরে সে। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছোটে ধারালো নখের আঘাতে। পূর্ণিমাদেবীর স্বামী এবং স্থানীয়রা তেড়ে যেতে অবশ্য রণে ভঙ্গ দেয় হনুমান। ততক্ষণে অবশ্য নেতিয়ে প়ড়েছেন বছর ছত্রিশের পূর্ণিমাদেবী। তাঁকে দিঘা স্টে়ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

Advertisement

সোমবার সন্ধ্যায় নিউ দিঘার অমরাবতী পার্ক এলাকার ঘটনা। কলকাতার নিমতলা স্ট্রিটের বাসিন্দা পূর্ণিমাদেবী সপরিবারে দিঘা বেড়াতে এসেছিলেন রবিবার। সোমবার তাঁরা অমরাবতী পার্কে বেড়াতে যান। সেখানেই একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন। তাঁর স্বামী শিশির চন্দ বলেন, ‘‘এ ভাবে হনুমান খাওয়াতে অভ্যস্ত আমরা। কলকাতার দক্ষিণেশ্বর কত হয়েছে! এই হনুমানটিও তো শান্ত ভাবেই বাদাম খেল। কিন্তু তারপর যে এমন হবে তা ভাবিনি।’’

হাসপাতাল সূত্রের খবর, গলার ক্ষত বেশ গভীর। তবে শ্বাসনালী পর্যন্ত ক্ষত পৌঁছয়নি। না হলে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারত। আপাতত তিনি বিপণ্মুক্ত। মঙ্গলবার সকালে কলকাতা ফিরে গিয়েছেন পূর্ণিমাদেবী।

Advertisement

স্থানীয় ব্যবসায়ী পরিমল সার বলেন, ‘‘গত কয়েকদিন ধরেই হনুমানটিকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে। এ দিন কোনও প্ররোচনা ছাড়াই সে আক্রমণ করে বসে। আমরাও আতঙ্কিত।’’ ঘটনায় আতঙ্কিত অন্য পর্যটকেরাও। দিঘা বেড়াতে এসে অমরাবতী পার্কে আসেন অনেকেই। সেখানে এসে হনুমানের পাল্লায় পড়তে হতে পারে জেনে অনেকেই পিছিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয়রাও সতর্ক করে দিচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, নিরাপত্তার জন্য সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

যদিও এ বিষয়ে বন দফতরে কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি বলে দাবি করেছেন জেলা বন আধিকারিক স্বাগতা দাস। তবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাসও দেন তিনি।

কিন্তু বাদাম খাওয়ার পরও কেন আক্রমণ করল হনুমানটি। স্বাগতাদেবীর দাবি, ‘‘কোনও ভাবে উত্যক্ত না করলে হনুমান কাউকে আক্রমণ করে না। এ ক্ষেত্রে পূর্ণিমাদেবী হয়তো উত্যক্ত করেননি। কিন্তু অন্য কোনও ভাবে আগে থেকেই হনুমানটি বিরক্ত হয়েছিল হয়ত।’’ তাঁর আরও অনুমান, হয়তো হনুমানটি আশা করেছিল তাকে আরও কিছু খেতে দেওয়া হবে। বাদাম ফুরিয়ে যাওয়াতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন