মৌমিতা রায়। —নিজস্ব চিত্র।
চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখে দু’টো চোখ। জয়েন্ট দিয়ে মেডিক্যাল পড়ার জন্য তৈরি মৌমিতা।
কিন্তু, আর্থিক সামর্থ্য যে তেমন নেই। স্বপ্নপূরণের পথে দারিদ্র্যই কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে না তো? ভাল ফল করেও দুর্ভাবনা কাটছে না মৌমিতা রায়ের। মনে অবশ্য জোর রয়েছে। যে জোরের জেরেই এই পথটুকু পেরোতে পেরেছে সে। তাই ভরসা করে স্বপ্নের উড়ানে সওয়ারি হতে চাইছে এই কৃতী ছাত্রী। স্বপ্ন যে অনেক দূর। আর রয়েছে আশা, চলার পথে কখনও অসুবিধেয় পড়লে নিশ্চয়ই কোনও সহৃদয়ের হাত তার দিকে এগিয়ে আসবে। যে হাতে হাত রেখে আরও অনেকটা পথ পেরোনো যাবে।
কেশপুরের তোড়িয়া হাইস্কুলের ছাত্রী মৌমিতা মাধ্যমিকে ৬১২ নম্বর পেয়েছে। হাটবাঁধে সামান্য কৃষিকাজ করেন বাবা অমরকান্ত রায়। মা দীপালিদেবী গৃহবধূ। তিনবোনের মধ্যে মৌমিতাই ছোট।
বিঘা দুয়েক জমি চষেই সংসার চলে। দারিদ্র্যের মধ্যেই বড় হয়ে ওঠা। অমরকান্তবাবু বলছিলেন, “জানি না মেয়ের স্বপ্নপূরণ করতে পারব কি না। কোনও রকমে সংসার চলে। স্কুলের শিক্ষকেরা সব রকম সহযোগিতা করেছেন। না- হলে এই ফল ও করতে পারত না।”
মৌমিতার পছন্দের বিষয় বিজ্ঞান। জীবনবিজ্ঞানে ৯৫ নম্বর পেয়েছে মৌমিতা। তোড়িয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্পল গুড়ে বলছিলেন, ‘‘ইচ্ছে আর মনের জোরে ও এত ভাল ফল করেছে। আমাদের সকলের শুভেচ্ছা থাকছে। ওর ভবিষ্যত জীবন আরও উজ্জ্বল হবে।” তাঁর আশ্বাস, মৌমিতার মতো ছাত্রীরা যদি একটু আর্থিক সাহায্য পায়, তাহলে আরও বেশি বিকাশ ঘটাতে পারে। আমরা যতটা পারি সহযোগিতা করি। কেশপুরের এই স্কুলে যারা পড়ে তাদের অনেকেই খুব খুব সাধারণ বাড়ি থেকে উঠে আসা। পরিবারে অভাব- অনটন রয়েছে। তাতে কী? সব কাঁটা সরিয়েই স্বপ্নের উড়ান ডানা মেলল বলে। যে উড়ানের সওয়ারি হবে মৌমিতা।