সাফাই: পুরসভার অভিযান। খড়্গপুরের গিরিময়দান এলাকায়। সোমবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
আক্রান্ত একশো ছুঁই ছুঁই। ইতিমধ্যে দু’জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুও হয়েছে। ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে থাকায় অবশেষে টনক নড়ল খড়্গপুর পুরসভার। মশা নিধনে সোমবার থেকে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অভিযানে নামল খড়্গপুর পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে খবর, প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গি মোকাবিলায় অভিযানের জন্য ১০ জন শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় জঞ্জাল সাফাই, নর্দমা পরিষ্কার, মশা মারার তেল স্প্রে করা, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর কাজ চলছে। শহরকে কয়েকটি এলাকায় ভাগ করে চলছে অভিযান। অভিযানে ১২টি ট্রাক্টর ও ৪টি মাটি কাটার যন্ত্র ব্যবহার করে রাস্তায় জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে। এ দিন শহরের বড়বাতি থেকে গোলবাজার, মন্দিরতলা এলাকা, খরিদা থেকে মালঞ্চ ও নিউ সেটলমেন্ট এলাকায় আবর্জনা সাফাই করা হয় বলে পুরসভা সূত্রে খবর।
গত শুক্রবার খড়্গপুর শহরের কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করে একটি নোডাল কমিটি গড়া হয়। কমিটির উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। তারপরে সোমবার থেকে মাঠে নেমেছে পুরসভার বিশেষ বাহিনী। এক সপ্তাহ ধরে চলবে অভিযান। এ জন্য প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “শহরকে ডেঙ্গি মুক্ত করতে বিশেষ এই অভিযান। এ জন্য যত টাকা লাগে খরচ করা হবে। শহরের মূল রাস্তায় কেন্দ্রীয়ভাবে ও প্রতিটি ওয়ার্ডে বেশি সংখ্যক শ্রমিক নামিয়ে সাফাই অভিযান চলছে।”
দিন কয়েক আগেই ডেঙ্গিতে উজ্জ্বল মাইতির জামাইবাবুর মৃত্যু হয়েছে। খরিদার কুমোরপাড়া এলাকার বাসিন্দা উজ্বলবাবু বলছিলেন, “এতদিনে দেখছি আমাদের এলাকায় সাফাই অভিযান চলছে। আগে থেকে পুরসভা সচেতন হলে হয়তো আমার জামাইবাবুর মৃত্যু হত না।”
শহরের সর্বত্র সাফাই অভিযান চলছে বলে পুরসভার দাবি। যদিও শহরের কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁদের এলাকায় এমন কোনও অভিযান চোখে পড়েনি। সুভাষপল্লির বাসিন্দা আশিস মাইতির দাবি, “বিশেষ অভিযানের ছিটেফোঁটাও চোখে পড়েনি।’’
তাঁর কথায়, ‘‘এ ভাবে একদিন অভিযান চালালে হবে না। নিয়মিত অভিযান প্রয়োজন। তাছাড়া মানুষকেও অনেক সচেতন হতে হবে।” শহরের সর্বত্র কেন এখনও অভিযান শুরু হয়নি? পুরপ্রধান প্রদীপবাবু বলছেন, “প্রতিটি ওয়ার্ডে ৭ দিন কাজের জন্য ৭০ জন শ্রমিক দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এক সপ্তাহের মধ্যে ওয়ার্ডের প্রতিটি এলাকা পরিষ্কার করবে। তাই আজ যেখানে সাফাই হল না কাল নিশ্চয় সাফাই হবে।” ডেঙ্গি রোধে খড়্গপুরের মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে রেলের প্রতিনিধিদের নিয়ে টাস্কফোর্স কমিটির বৈঠক হয়েছে বলেও জানান তিনি।