শ্রমিক মেলেনি, আটকে সংস্কার

সংস্কারের কাজ থমকে। খড়্গপুরের মন্দিরতলা শ্মশান সংলগ্ন পুকুর ঘাটে জমছে আবর্জনা। ছ়ড়াচ্ছে দূষণ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মন্দিরতলার পুকুর সংস্কারে পুরসভা এতদিন কোনও পদক্ষেপ করেনি। পুকুরটি যে অছি পরিষদের অধীনে রয়েছে সংস্কার কাজে তাদেরও কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। বারবার আবেদন করেও কাজ হয়নি। এরপরে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পুকুর সংস্কারে উদ্যোগী হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৬ ০০:৫৭
Share:

মন্দিরতলা শ্মশানের পুকুরের হাল এমনই। — নিজস্ব চিত্র।

সংস্কারের কাজ থমকে। খড়্গপুরের মন্দিরতলা শ্মশান সংলগ্ন পুকুর ঘাটে জমছে আবর্জনা। ছ়ড়াচ্ছে দূষণ।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মন্দিরতলার পুকুর সংস্কারে পুরসভা এতদিন কোনও পদক্ষেপ করেনি। পুকুরটি যে অছি পরিষদের অধীনে রয়েছে সংস্কার কাজে তাদেরও কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। বারবার আবেদন করেও কাজ হয়নি। এরপরে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পুকুর সংস্কারে উদ্যোগী হন।

গত মার্চ মাসে মায়ের দেহ দাহ করতে মন্দিরতলা শ্মশানে গিয়ে দূষণের ছবিটা দেখেন খরিদার বাসিন্দা অমিত মিশ্র। তিনি ‘হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল’র জেলা যুগ্ম সম্পাদক। এরপরই এপ্রিল মাসের শেষে বন্ধু অভিমন্যু গুপ্তকে নিয়ে শ্মশানে দূষণ বন্ধে স্থানীয়দের সচতনতা বাড়ানোর কাজে নেমে পড়েন তিনি। গত ৪ মে এক বৈঠকও ডাকা হয়। বৈঠকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর জয়শ্রী পাল ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর কল্যাণী ঘোষকে ডাকা হয় বলে দাবি। কল্যাণীদেবী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। যদিও জয়শ্রীদেবী বৈঠকে আসেননি। এরপরই স্থানীয়রা পুকুর সংস্কারের কাজে হাত লাগান। এলাকার বাসিন্দাদের অনেকে কাজের জন্য অর্থ সাহায্যও করেছেন।

Advertisement

প্রথমে এলাকার ১৫ জন সংস্কারের কাজ শুরু করেন। পরে প্রায় ৫০ জন বাসিন্দা সামিল হন। সংস্কারের কাজে সামলি হয়েছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান তপনকুমার পাল। তিনি বলেন, “সংস্কার না হওয়ায় শ্মশানের ধারে পুকুর থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে। এলাকার যুবকেরা পুকুর সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছেন। স্থানীয়রা হাত না লাগালে পুরো কাজ করা সম্ভব হবে না। তাই আমিও ওঁদের পাশে রয়েছি।”

কাজে গতি আনতে শ্রমিক চেয়ে পুরসভায় যোগাযোগ করে স্থানীয়রা। যদিও এই কাজে পুরসভা কোনও সাহায্য করছে না বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে অমিতবাবু দাবি করেন, “পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের সঙ্গে দেখা করে শ্রমিক দেওয়ার কথা বলি। উনি ১০ জন শ্রমিক দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ ছাড়া সম্প্রতি ৫০ হাজার টাকা দেবেন বলেও তিনি জানান। কিন্তু কুড়ি দিন হয়ে গেলেও একজন শ্রমিকও পাইনি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘স্থানীয় দুই কাউন্সিলরও দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে। সকলেই যদি দায় এড়িয়ে যায় তবে কী ভাবে এই কাজ সম্পন্ন হবে জানিনা।”

যদিও এ বিষয়ে পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “ওঁরা আমার কাছে এসেছিল। এটা ঠিক আমিও শ্রমিক দেব বলেছিলাম। তবে ওঁদের যে আবেদন করতে বলেছিলাম তা ওঁরা করেনি। আবেদন ছাড়া কারও ব্যক্তিগত উদ্যোগে কী ভাবে পুরসভার শ্রমিক দেব?” অমিতবাবুর দাবি, “পুরপ্রধান প্রথমে আবেদন করতে বললেও পরে সব বুঝে আবেদন ছাড়াই শ্রমিক দেবেন বলেছিলেন। এখন জানিনা কেন এমন কথা বলছেন। তবে এই কাজ তো পুরসভার স্বতঃপ্রণেদিত হয়ে করা উচিত। সেখানে আমাদের আবেদনের অপেক্ষা করা হবে কেন?” পুরপ্রধানের জবাব, “ওই পুকুর ভাল ভাবেই সংস্কার করা হবে। আমাদেরও সেই পরিকল্পনা রয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন