পূর্ণাঙ্গ সংগ্রহশালা তৈরি করা হবে মোগলমারিতে

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মোগলমারিতে তৈরি করা হবে পূর্ণাঙ্গ সংগ্রহশালা। পুজোর আগেই শুরু হবে কাজ। এর জন্য প্রথম পর্যায়ে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা। প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের জন্য বরাদ্দ হয়েছে আরও প্রায় ৩ কোটি টাকা। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি ‘নবান্ন’-তে বৈঠকে বসেন প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

অশোক সেনগুপ্ত

মোগলমারি শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৫ ০১:১১
Share:

দাঁতনের মোগলমারি বৌদ্ধবিহারে খননকাজ চলছে। ছবিটি তুলেছেন রামপ্রসাদ সাউ।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মোগলমারিতে তৈরি করা হবে পূর্ণাঙ্গ সংগ্রহশালা। পুজোর আগেই শুরু হবে কাজ। এর জন্য প্রথম পর্যায়ে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা। প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের জন্য বরাদ্দ হয়েছে আরও প্রায় ৩ কোটি টাকা। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি ‘নবান্ন’-তে বৈঠকে বসেন প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

দাঁতন থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে মোগলমারির ‘সখিসেনার ঢিবি’র খননকার্য শুরু হয় ২০০৪ সালে। গোড়ায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই কাজ করে। মাঝে ২০০৯-’১০ সালে খননকার্য বন্ধ থাকে। ২০১৩ থেকে এই কাজের সামগ্রিক দায়িত্ব বর্তায় রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের অধীন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের। প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর বিনয় মানি এই তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘‘মনোহরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন ওই অঞ্চলে মাটির নীচে থেকে যে প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারের হদিশ মিলেছে, তার সামগ্রিক পরিচয় রাখা হবে প্রস্তাবিত সংগ্রহশালায়। এই সঙ্গে থাকবে উদ্ধার হওয়া সামগ্রী।’’

সংগ্রহশালা তৈরির জন্য ২০১৩-তে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করেন পরামর্শদাতা-স্থপতি মণীশ চক্রবর্তী। তার ভিত্তিতে সে বছর ২০ মার্চ অর্থ বরাদ্দ হয়। নবান্ন সূত্রের খবর, পর্যাপ্ত বিভাগীয় সমন্বয়ের অভাবে সেটি কার্যকর করা যায়নি। ফলে, প্রকল্পটি তখন খারিজ হয়ে যায়। এ তথ্য জানিয়ে বিনয় মানি বলেন, ‘‘সম্প্রতি আবার ওই প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’

Advertisement

কী কী থাকবে প্রস্তাবিত ওই সংগ্রহশালায়? এখনও পর্যন্ত দাঁতনের বৌদ্ধবিহার থেকে পাওয়া গিয়েছে পোড়ামাটির কিছু শিলমোহর, ‘শ্রীবন্দক মহাবিহার আর্যভিক্ষু সঙ্ঘ’ নামাঙ্কিত স্মারক প্রভৃতি। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর প্রভাকর পাল এ কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘এগুলো ছাড়াও সামন্ত রাজা সমাচার দেবের মিশ্র ধাতব মুদ্রা, সোনার পেনডেন্ট পাওয়া গিয়েছে। প্রত্ন-অনুসন্ধানে নামা হয়েছিল ভূগর্ভের প্রায় ৬ মিটার নীচে।’’ পোড়ামাটির ৩৮ সেন্টিমিটার লম্বা, ২৫ সেমি চওড়া, ৬ সেমি পুরু প্রচুর ইটের খোঁজও মিলেছে খননকার্যে। এগুলোও দর্শকরা দেখতে পাবেন সংগ্রহশালায়।

কবে নাগাদ শুরু হতে পারে এই নির্মাণকাজ? পূর্ত দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রাজীব বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমি প্রাথমিক একটা নকশা পেয়েছি। চূড়ান্ত নকশার জন্য অপেক্ষা করছি। সেটা পেলে তবেই কিছু প্রথা মেনে নির্মাণকাজ শুরু করে দেওয়া সম্ভব।’’ ঠিক হয়েছে সংগ্রহশালা হবে দ্বিতল। নীচের তলায় থাকবে অতিথিশালা। উপরের তলে স্মারক-সম্ভার। কাঠামো নির্মাণের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নানা কাজের জন্য চতুর্দশ অর্থ কমিশনের কাছে চাওয়া হবে প্রায় দেড় কোটি টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন