Makrampur

নির্দলে বাধা পেতেই বিজেপির প্রার্থী

নাকফুড়িদের সঙ্গে ছিলেন এলাকা থেকে জেতা পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ সুকমলা বেরা ও পঞ্চায়েত সদস্যা ডুমনি মুর্মু-সহ দুই শতাধিক মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মকরামপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩ ০৯:১৪
Share:

বিজেপির পতাকা ধরলেন নাকফুড়ি মুর্মু-সহ অন্যরা। নিজস্ব চিত্র Stock Photographer

দ্বন্দ্ব ছিল দীর্ঘদিনের। তবুও কঠিন সিদ্ধান্ত নেননি। বুধবার নির্দল হয়ে মনোনয়ন জমা করতে এসেছিলেন নারায়ণগড়ের মকরামপুরের তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি নাকফুড়ি মুর্মু ও অন্যরা। বাধা দিলেন বর্তমান অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত শীট ও তাঁর সঙ্গীরা। এরপরই বৃহস্পতিবার বিজেপি পতাকা ধরলেন নাকফুড়িরা। গ্রাম পঞ্চায়েত মনোনয়ন জমা দিলেন নাকফুড়ি স্বয়ং ও তাঁর দশ সঙ্গী।

Advertisement

এ দিন নাকফুড়িদের সঙ্গে ছিলেন এলাকা থেকে জেতা পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ সুকমলা বেরা ও পঞ্চায়েত সদস্যা ডুমনি মুর্মু-সহ দুই শতাধিক মানুষ। বেলদাতে রাজ্য বিজেপির এক সদস্যের বাড়িতে যোগদানের কর্মসূচি সারে বিজেপি। শর্ত অনুযায়ী বিজেপিতে নবাগতেরা এ দিন দলের হয়ে মনোনয়ন জমা করেছেন। নারায়ণগড়ের মকরামপুরে প্রাক্তন ও বর্তমান অঞ্চল সভাপতির মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিলই। গত ২০১৮ সালের অগস্ট মাসে মকরামপুর অঞ্চল তৃণমূলের কার্যালয়ে বিস্ফোরণে তিনজনের মৃত্যু হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে। তখনই অবশ্য অন্য একটি মামলায় লক্ষ্মীকান্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তার পরে তৎকালীন ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মিহির চন্দ দলের জেলার অনুমোদন নিয়ে অঞ্চল সভাপতির দায়িত্ব দেন নাকফুড়িকে। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে হঠাৎই নাকুফুড়িকে সরিয়ে ফের সেই লক্ষ্মীকান্ত শীটকে দায়িত্বে ফেরানো হয়।

অভিযোগ নাকফুড়ির অনুগামী পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সুকমলা বেরা-সহ পঞ্চায়েত সদস্যদের কাজ করতে দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন সময় নানাভাবে অত্যাচার করা হয়েছে। এলাকা অশান্ত করা হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে লক্ষ্মীকান্তের লোকজন মনোনয়ন জমা করেছেন। ফলে কোণঠাসা নাকফুড়িরা পঞ্চায়েতে মনোনয়ন জমা করে লক্ষ্মীকান্তের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চেয়েছিলেন। বুধবার পঞ্চায়েতের ২০টি ও পঞ্চায়েত সমিতির ৩টি আসনে নির্দলে মনোনয়ন জমা দিতে এসে বাধার মুখে পড়েন। নাকফুড়িকে হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ। এক নাকফুড়ি অনুগামীর গাড়িরও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। নাকফুড়ি শিবিরের অভিযোগ, এ সবে নেতৃত্ব দেন লক্ষ্মীকান্ত নিজেই। পরে অবশ্য ব্লক অফিসে ঢোকার কিছুটা দূর থেকে জটলা সরিয়ে দেয় পুলিশ। তার পরেই সিদ্ধান্ত পাল্টে যায়। বিজেপির সঙ্গে চলে কথাবার্তা।

Advertisement

নাকফুড়ির বক্তব্য," দিন দিন অত্যাচার বাড়ছিল অঞ্চল সভাপতির। আমাদের বহুদিন বাইরে থাকতে হয়েছে। মানুষ আর নিতে পারছেন না। তাই বিজেপিতে যোগ দিয়ে বিজেপির হয়ে পঞ্চায়েতে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। " এ দিন বিজেপির পতাকা তুলে দেন বিজেপি নেতা রমাপ্রসাদ গিরি, লক্ষ্মীকান্ত সাউ, তপন ভুঁইয়া, গৌরীশংকর অধিকারীরা। যোগদানের পর রমাপ্রসাদ বলেন," লক্ষ্মীকান্ত শীটের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতেই তারা আজকে বিজেপিতে এসেছে।" যদিও লক্ষ্মীকান্তের পাল্টা বক্তব্য," যাঁরা এদিন বিজেপিতে গেলেন তাঁরা গত লোকসভা নির্বাচনের পরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।" ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুকুমার জানার বক্তব্য," ওরা দলেই নেই ফলে দলে প্রভাব পড়ার কী আছে।"

এ দিন বিজেপির হয়ে পঞ্চায়েত সমিতিতে মনোনয়ন জমা দিলেন নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অলক রায়। তিনি বেলদা ২ পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান ছিলেন। এ দিন পঞ্চায়েত এলাকার ২৬ নম্বর আসনে মনোনয়ন জমা করেছেন। যে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তৃণমূলের নারায়ণগড় পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ অনাদি বারিক। অলক বলেন, ‘‘বিধায়ক নিজের মতো চলার চেষ্টা করছেন। তাই বিজেপিতে মনোনয়ন জমা দিয়েছি।’’ যদিও বিধায়কের একসময়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতের সম্পর্কে এদিন সূর্যকান্ত অট্ট বলেন," মানুষের চাহিদা এখন অনেক বেশি। তাই কোথায় তার চাহিদা পূরণ হবে সেখানেই গেছে। শুভেচ্ছা রইল।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন