হলদি নদীর ধারে বিস্তৃত ঝাউবন। নিজস্ব চিত্র
হলদি নদীর তীরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে থাকা ঝাউ আর ইউক্যালিপ্টাসের জঙ্গল। জমি রক্ষার লড়াইয়ে গুলি-বারুদে একদা উত্তপ্ত নন্দীগ্রামের এই এলাকা এখন চড়ুইভাতির জায়গা। যার পরিচিতি নন্দীগ্রামের জেলিংহ্যাম বলেই। কিন্তু বাস্তবে এই জমি বন দফতরের অধীনে। এ বার বড়দিন এবং ইংরাজি নববর্ষে প্রথম দিন কয়েক হাজার মানুষ ভিড় করবেন এখানে এমনটাই আশা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
শীতের আমেজ শুরু হতে না হতেই জেলিংহ্যামের জঙ্গলে চড়ুইভাতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কাঁথি, এগরা মহকুমার সরকারি নানা দফতরের আধিকারিকদের চড়ুইভাতির প্রথম পছন্দ এখন জেলিংহ্যাম। তবে বরাবরের নিয়ম পুরোপুরি বদলে ফেলেছে এখানকার স্থানীয় বন দফতর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতে বড়দিন ও ছুটির দিনে যাঁরা চড়ুইভাতি করতে আসতেন তাঁরা নানা অনিয়ম করতেন বলে অভিযোগ। চড়ুইভাতির শেষে এলাকায় পড়ে থাকত নানা বর্জ্য ও প্লাস্টিক, থার্মোকল। এছাড়াও গোটা জঙ্গলে যেখানে সেখানে চড়ুইভাতির ফলে রান্নার ধোঁয়া ও উত্তাপে পাখিদের পাশপাশি নদীতীরে লাগানো ঝাউ আর ইউক্যালিপ্টাসসের ক্ষতি হত।
তবে প্রশাসনের তরফে আগের চেয়ে সতর্কতা অনেক বেড়েছে। আস্ত জঙ্গলের মধ্যে যেখানে গাছপালা কম সেখানে চড়ুইভাতির জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। নোংরা-বর্জ্য ফেলার জন্য ডাস্টবিন রাখা এবং শৌচাগার বানিয়ে দিয়েছে বন দফতর। পাশাপাশি আগাম অনুমোদন ছাড়া কাউকে চড়ুইভাতি করতে দেওয়া হবে না বলে ঠিক করেছে বন দফতর। ইতিমধ্যে লিফলেট ছাপিয়ে নন্দীগ্রাম ও খেজুরির বিভিন্ন এলাকায় প্রচারও করা হয়েছে বন দফতরের পক্ষ থেকে।
জঙ্গলে ময়লা ফেলার জায়গা। নিজস্ব চিত্র
এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম বন দফতরের বিট অফিসার নারায়ণচন্দ্র গিরি বলেন, ‘‘বন আমাদের প্রকৃতিকে রক্ষা করে। তাই চড়ুইভাতির আনন্দে যাতে প্রকৃতির ক্ষতি না হয়, তার জন্য আমরা নানা পদক্ষেপ করেছি। এর জন্য চড়ুইভাতি করতে আসা লোকজনের সুবিধাই হবে।’’