বিভেদ নয়, নাজিম স্মরণ যেন মিলন ক্ষেত্র

বড়দিনে সান্তাক্লজ সেজে নেমে পড়তেন রাস্তায়। গায়ে লাল জোব্বা চাপিয়ে ঝোলায় রকমারি উপহার নিয়ে কচিকাঁচাদের মুখে হাসি ফোটাতেন। পুজো হোক বা ঈদ, সব উত্সবই মিলন মেলায় পরিণত হত।

Advertisement

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৮
Share:

শ্রদ্ধা: মৃত্যুবার্ষিকীতে মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান নাজিম আহমেদের ছবিতে মালা দিলেন সকলে। নিজস্ব চিত্র

বড়দিনে সান্তাক্লজ সেজে নেমে পড়তেন রাস্তায়। গায়ে লাল জোব্বা চাপিয়ে ঝোলায় রকমারি উপহার নিয়ে কচিকাঁচাদের মুখে হাসি ফোটাতেন। পুজো হোক বা ঈদ, সব উত্সবই মিলন মেলায় পরিণত হত। তিনি নাজিম আহমেদ। মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান। শহরের এক বর্ণময় চরিত্র।

Advertisement

মঙ্গলবার তাঁর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় টুকরো টুকরো স্মৃতিই ফিরল। অলিগঞ্জ অ্যাথলেটিক ক্লাবের উদ্যোগে ডাক শ্রমিক ভবনের সভাঘরে এ দিন স্মরণসভার পাশাপাশি রক্তদান শিবিরও হয়। উদ্যোক্তাদের পক্ষে সোমনাথ কারক, শেখ সানিরা বলছিলেন, “নাজিম আহমেদকে মেদিনীপুরের মানুষ ভুলবে না।”

শহর মেদিনীপুরের কাছে নাজিম আহমেদ মানেই অন্য রকম কিছু। কখনও বুলডোজারের মাথায় চড়ে বেআইনি নির্মাণ ভেঙেছেন, কখনও পুরসভার ভল্টে টাকা থাকায় সারা রাত পুরভবনের সামনে লাঠি হাতে পাহারা দিয়েছেন। দলমতের উর্ধ্বে উঠে কাজ করতে ভালবাসতেন নাজিম। সকলকে নিয়ে চলতেন। এ দিনের সভাও তাই সর্বদলের, সর্বমতের সভা হয়ে ওঠে। ছিলেন আরএসপি-র জেলা সম্পাদক শক্তি ভট্টাচার্য, মেদিনীপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খান, জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তীর্থঙ্কর ভকত, বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সভাপতি অরূপ দাস প্রমুখ। ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হৃষিকেশ দে, সঙ্গীতশিল্পী হায়দার আলি প্রমুখ। ছিলেন পাড়ার লোকজনেরা। সভাঘরে নাজিমের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান সকলে। এসেছিলেন নাজিমের স্ত্রী রহিমা আহমেদও।

Advertisement

কংগ্রেস নেতা সৌমেন বলছিলেন, “মানুষটাই অন্য রকম ছিলেন। শহরের উন্নয়নের একটা তাগিদ ছিল।” আরএসপি-র জেলা সম্পাদক শক্তি ভট্টাচার্যের কথায়, “ওঁর মধ্যে অনেক গুণ ছিল। অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করতেন। দলমতের উর্ধ্বে উঠে কাজ করতেন।” বিজেপির যুব নেতা অরূপেরও মত, “নাজিমদা যোগ্য প্রশাসক ছিলেন। ওঁর স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।”

২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান নাজিম আহমেদ। ট্রেন লাইনে ঝাঁপ দিয়েছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান। দেখতে দেখতে তিন বছর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু স্মৃতি এখনও টাটকা। এ দিনের সভাতেও তাই শোনা গিয়েছে মনে রাখার সুর, ‘আমার ভিতর বাহিরে...অন্তরে অন্তরে...আছো তুমি হৃদয় জুড়ে...’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement