চিকিৎসায় অবহেলায় ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর চিকিৎসায় অবহেলার দায়ে কাঁথি শহরের এক চিকিৎসককে ১ লক্ষ টাকা ও একটি নার্সিংহোমকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৫
Share:

অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর চিকিৎসায় অবহেলার দায়ে কাঁথি শহরের এক চিকিৎসককে ১ লক্ষ টাকা ও একটি নার্সিংহোমকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবারই কড়া বার্তা দিয়েছেন। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে যে একই অভিযোগের তির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায়ে সেটা স্পষ্ট।

Advertisement

জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথির ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আঠিলাগড়ি এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ মৌলিসা শিকদার। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ওই বধূ অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন শহরের সরস্বতীতলায় চিকিৎসক মফিজুল হোসেনের কাছে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওই গৃহবধূর গর্ভপাত করানোর জন্য চারুচন্দ্র নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৫ সালের ২৭ জানুয়ারি ওই নার্সিংহোমে ওই মহিলার গর্ভপাত করানো হয়। গৃহবধূর অভিযোগ, তিনি ব্লাড সুগারের রোগী জানানো সত্ত্বেও চিকিৎসক গুরুত্ব দেননি। ফলে অস্ত্রোপচারের পর ওই চিকিৎসকের সুপারিশ অনুযায়ী তিনি ওষুধ খেলেও শারীরিক সমস্যা হয়। ফের তিনি চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি ঘুমের ওষুধ ও অ্যান্টাসিড খাওয়ার পরামর্শ দেন। তাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। বাধ্য হয়ে ওই মহিলা কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হন।

সেখান থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে ওই মহিলা চিকিৎসক মফিজুল হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ক্রেতাসুরক্ষা আদালতে মামলা দায়ের করেন। জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের নির্দেশে জেলা স্বাস্থ্য দফতর গঠিত চার সদস্যদের কমিটি তদন্ত করে। জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ওই মামলায় উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনা হয়। গত ৩১ জানুয়ারি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বন্দনা রায় চিকিৎসায় অবহেলার জন্য চিকিৎসক মফিজুল হোসেনকে এক লক্ষ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোম কতৃপক্ষকে ২ লক্ষ টাকা গৃহবধূকে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

Advertisement

মফিজুল হোসেন বলেন, ‘‘চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ ঠিক নয়। ওই গৃহবধূ যে ব্লাড সুগারের রোগী ছিলেন সে বিষয়ে আমাকে কিছু জানাননি। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন জানাব।’’ কাঁথির সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমের কর্তা রণেন্দ্রনাথ দাস বলেন, ‘‘আমাদের নার্সিংহোমে বড় বড় অস্ত্রোপচার হয়। পরিকাঠামোর অভাবের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ-আদালতে আবেদন জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন