সেচ ব্যবস্থার হাল ফেরাতে পশ্চিম মেদিনীপুরেও শুরু হতে চলেছে ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চন যোজনা’। গত বছর এই প্রকল্প ঘোষণা করে কেন্দ্র। সেই মতো জঙ্গলমহলের এই জেলায় এই প্রকল্পের অধীন ২০টি ক্লাস্টার গড়ে উঠবে। এক-একটি ক্লাস্টারে ২০-৩০ হেক্টর জমি থাকবে। বরাদ্দ অর্থে সেই এলাকার সেচ ব্যবস্থার হাল ফেরানো হবে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সম্প্রতি এই প্রকল্প নিয়ে মেদিনীপুরে এক বৈঠক হয়েছে। সেখানে প্রকল্পের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। কোন ব্লকে কতগুলো ক্লাস্টার তৈরি হবে, তা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। জেলা থেকে সেই মতো প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। জেলার কৃষি অধিকর্তা প্রভাত বসু বলেন, “পশ্চিম মেদিনীপুরে ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে।’’ আর জেলার কৃষি-সেচ কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষের বক্তব্য, “এই প্রকল্প রূপায়িত হলে সেচ ব্যবস্থার আরও উন্নতি হবে।’’ সেচ ব্যবস্থার হাল ফেরাতে একাধিক প্রকল্প রয়েছে। এই প্রকল্প নতুন। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য, কম জল খরচ করে বেশি চাষ। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, প্রস্তাবিত ২০টি ক্লাস্টারের মধ্যে গড়বেতা-৩ ব্লকে একটি, শালবনিতে ২টি, গড়বেতা-১ ব্লকে একটি, মেদিনীপুর সদর ব্লকে একটি, বিনপুর- ২ ব্লকে ৪টি, গড়বেতা-২ ব্লকে একটি ক্লাস্টার গড়ে ওঠার কথা। পাশাপাশি সাঁকরাইল, নয়াগ্রাম, ঝাড়গ্রামে ২টি করে ক্লাস্টার গড়ে উঠবে। ক্লাস্টারপিছু বরাদ্দ হবে ১৩ লক্ষ টাকা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচ ব্যবস্থা এখনও সে ভাবে গড়ে ওঠেনি। ফলে, চাষের কাজে সমস্যা হয়। স্রেফ জলাভাবে অনেক সময় চাষ মার খায়। ক্ষতির মুখে পড়েন কৃষকরা। জেলায় মোট কৃষি জমির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ হেক্টর। এর মধ্যে সেচের সুবিধে রয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ হেক্টর জমিতে। জেলার জঙ্গলমহলে আবার কৃষি জমি রয়েছে প্রায় ২ লক্ষ হেক্টর। এরমধ্যে সেচের সুবিধে রয়েছে প্রায় ১ লক্ষ হেক্টর জমিতে। বাস্তবের সঙ্গে এই পরিসংখ্যানের কিছুটা ‘পার্থক্য’ রয়েছে বলেও একাংশ গ্রামবাসীর দাবি। এঁদের বক্তব্য, খাতায়- কলমে যা দেখানো হয়েছে, সেই পরিমাণ জমিতেও সেচের সুবিধা নেই।
জেলায় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় দেড় হাজার মিলিমিটার। জেলার উপর দিয়ে গিয়েছে কংসাবতী, সুবর্ণরেখা নদী। কিন্তু তাও বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচের সুবিধা নেই। নতুন প্রকল্প হলে সঙ্কট কাটবে বলেই আশা। জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা দিব্যেন্দু সামন্ত বলেন, “বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পগুলো রূপায়িত হলে সেচের আরও উন্নতি হবে।’’