যক্ষ্মা নির্ণয়ে নয়া যন্ত্র খড়্গপুর, বেলদায়

যক্ষ্মা নির্ণয়ে নতুন যন্ত্র পেয়েছে খড়্গপুর। ‘কার্টিজ বেসড নিউক্লিক অ্যাসিড অ্যাম্পিফিকেশন টেস্ট’ বা ‘সিবিন্যাট’ নামে এই পরীক্ষায় দ্রুত যক্ষ্মা নির্ণয় সম্ভব হবে বলেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
Share:

মাস খানেক ধরে কাশির দমকে কষ্ট পাচ্ছিলেন কেশিয়াড়ির সুদীপ চক্রবর্তী (নাম পরিবর্তিত)। দম ফেলার জো ছিল না। বারবার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে, নানা ধরনের ওষুধ খেয়েও তাঁর কাশি কমেনি। শেষে তিনি আসেন খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। কফ পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়। প্রায় এক সপ্তাহ পরে আসে রিপোর্ট। তত দিনে কাশির মাত্রা বেড়েছে। কফের সঙ্গে উঠছে রক্তও। রিপোর্টে ধরা পড়ে সুদীপবাবু যক্ষ্মায় আক্রান্ত।

Advertisement

পুরনো ব্যবস্থায় কফ পরীক্ষায় দেরি হওয়ায় সুদীপবাবুর মতো খড়্গপুর মহকুমার বহু রোগীরই এতদিন সমস্যা হচ্ছিল। অবশেষে সেই সমস্যা মিটেছে। কারণ, যক্ষ্মা নির্ণয়ে নতুন যন্ত্র পেয়েছে খড়্গপুর। ‘কার্টিজ বেসড নিউক্লিক অ্যাসিড অ্যাম্পিফিকেশন টেস্ট’ বা ‘সিবিন্যাট’ নামে এই পরীক্ষায় দ্রুত যক্ষ্মা নির্ণয় সম্ভব হবে বলেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল ও বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে নতুন এই যন্ত্র বসানো হয়েছে। ইতিমধ্যে খড়্গপুরে ১৫ জন এবং বেলদায় ২৫ জনের কফ পরীক্ষাও করা হয়েছে।

জাতীয় যক্ষ্মা প্রতিরোধ প্রকল্পে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে যন্ত্রটি এসে পৌঁছেছে। প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার যন্ত্র হাসপাতালের বহির্বিভাগের একটি ঘরে বসানো হয়েছে। নতুন এই যন্ত্রটিতে কম সময়ের মধ্যে কফ পরীক্ষা করে যক্ষ্মা নির্ণয় সম্ভব হবে। সেই রিপোর্ট সম্পূর্ণ রূপে নির্ভরযোগ্য হবে বলেও চিকিৎসকেদের দাবি।

Advertisement

এত দিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কফ পরীক্ষার এই যন্ত্র ছিল। তবে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে সেই মান্ধাতা আমলের পদ্ধতিতেই কফ পরীক্ষা করে যক্ষা নির্ণয় হত। এখনও সপ্তাহে তিনদিন পুরনো পদ্ধতিতে কফ পরীক্ষা করা হয়। প্রতিদিন ৭০-৮০ জনের কফ পরীক্ষা হয় এখানে। অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে এক-একটি কফ পরীক্ষায় এক থেকে দেড় দিন পর্যন্ত সময় লাগে। তাই রিপোর্ট পেতেও বেশ দেরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে রিপোর্ট নির্ভরযোগ্য হওয়া নিয়েও সংশয়ে থাকেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। কিন্তু এই আধুনিক যন্ত্রে নির্ভরযোগ্য রিপোর্ট পেতে মাত্র দেড় মিনিট সময় লাগবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। কফ পরীক্ষার নতুন যন্ত্র আসায় খুশি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি। ইতিমধ্যেই দ্রুত যন্ত্র চালু করতে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সমিতির সভাপতি নির্মল ঘোষ বলেন, “এই যন্ত্রটি যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ে খুব উপযোগী।” এ প্রসঙ্গে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমাদের হাসপাতালে কফ পরীক্ষায় চাপ রয়েছে। তাই যন্ত্রটি প্রয়োজন ছিল। এতে কম সময়ে যক্ষ্মার সঠিক নির্ণয় সম্ভব হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন