প্রস্তাবিত: চিল্কিগড়ের এই জমিতেই হবে প্রজাপতি পার্ক। নিজস্ব চিত্র
জঙ্গলের মুক্ত পরিবেশে উড়ে বেড়ায় রং-বেরঙের প্রজাপতি। এ বার ফুলের বাগান তৈরি করে তাদের হাজির করা হবে সেখানে।
চিল্কিগড়ের জঙ্গলে ডুলুং নদীর পাড়ে কনকদুর্গা মন্দির লাগোয়া এলাকাতে ‘প্রজাপতি পার্ক’ তৈরি করতে চলেছে জামবনি ব্লক প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির নিজস্ব তহবিল থেকেই তৈরি করা হবে পার্কটি। এখানে থাকবে একটি ল্যাবরেটরি। সেখানে গুটি থেকে প্রজাপতির চাষ করা হবে। এমনিতে চিল্কিগড়ের জঙ্গলে রং-বেরঙের নানা প্রজাপতি উড়ে বেড়ায়। বাগানে রকমারি ফুলের আকর্ষণে প্রজাপতিদের হাজির করানোটাই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। প্রকল্পটি রূপায়িত করতে কমপক্ষে তিন জন ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রয়োজন। এ ছাড়া উদ্যান দেখভালের জন্য দরকার জনা পাঁচেক কর্মী। উদ্যোগ প্রসঙ্গে গোয়ালতোড় কলেজের অধ্যক্ষ কথা প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপক দেবনারায়ণ রায় বলেন, “চিল্কিগড়ের জঙ্গল জীববৈচিত্রে ভরপুর। ৫০ থেকে ৬০ রকমের প্রজাপতি রয়েছে চিল্কিগড়ে। বনের ফুলের কারণে সেখানে এই সম্ভার। ফুলের বাগান তৈরি করে পার্ক বানালে তা আকর্ষণ করবে পর্যটকদের। নানা রকমের প্রজাপতি দেখার সুযোগ পাবেন মানুষ।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সমীর ধল জানান, উদ্যানটি পরিচালনার জন্য পর্যটকদের কাছ থেকে উদ্যানের প্রবেশ মূল্য নেওয়া যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে প্রশাসনিক স্তরে। চলতি অর্থবর্ষেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
জঙ্গলের মধ্যে কনকদুর্গা মন্দির, ডুলুং নদী এবং বর্ষা অরণ্যের মতো জঙ্গলের টানে পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে বছরভর। প্রশাসনের উদ্যোগে মন্দির চত্বরে সৌন্দর্যায়নের কাজ হয়েছে। একটি পরিখা করে বোটিংয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। গাছের গায়ে ঝোলানো হয়েছে নামফলক। চিল্কিগড় জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় জামবনি ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে একটি অতিথিশালা তৈরি হয়েছে। শীতের মরসুমে সেটি পুরোদস্তুর চালু করা হবে বলেই খবর। এ ছাড়া রেস্তোরাঁ, ম্যারেজ হল তৈরির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। সম্প্রতি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির টাকায় মন্দির চত্বরে বসানো হয়েছে বিশালাকৃতি ডাইনোসর, হাতি, কুমিরের মডেল।
জামবনি বিডিও মহম্মদ আলম আনসারি বলেন, “জঙ্গলের পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখে চিল্কিগড়কে আকর্ষণীয় ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। জঙ্গলের রকমারি প্রজাপতিদের এক জায়গায় হাজির করাতেই প্রজাপতি উদ্যান তৈরির জন্য প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা চলছে।” ঝাড়গ্রামের এক পর্যটন সংস্থার কর্তা সুমিত দত্ত বলেন, “চিল্কিগড়ে কলকাতা-সহ ভিন্ রাজ্য থেকেও বহু লোক জন আসেন। প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রজাপতি সংরক্ষণের এই উদ্যোগে চিল্কিগড় আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।”