রাতের দিঘায় নেই পাহারা

এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে সৈকত শহর দিঘার নিরাপত্তা। অভিযোগ উঠছে, দিনে যদিও বা নুলিয়া, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের নজরদারি থাকে, সন্ধে নামলেই সব ভোঁ-ভাঁ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৭ ০১:৪৩
Share:

স্নান করতে গিয়ে নয়, দিঘার সমুদ্রে নেহাতই পা ধুতে গিয়ে তলিয়ে গেলেন কলকাতার এক পর্যটক। পরে উদ্ধার হল তাঁর দেহ।

Advertisement

এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে সৈকত শহর দিঘার নিরাপত্তা। অভিযোগ উঠছে, দিনে যদিও বা নুলিয়া, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের নজরদারি থাকে, সন্ধে নামলেই সব ভোঁ-ভাঁ।

শনি-রবির সঙ্গে ইদ জুড়ে যাওয়ায় টানা ছুটিতে দিঘায় এখন উপচানো ভিড়। পাহাড়ে বন্‌ধ চলায় অনেকেই সৈকতে গিয়েছেন। কলকাতার হরিদেবপুর থানার কেওড়াপুকুর বাজারের বাসিন্দা সুপ্রিয় চক্রবর্তী (৪২)-ও সপরিবার দিঘায় গিয়েছিলেন শনিবার। পার্ক সার্কাসের এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী সুপ্রিয় রবিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ওল্ড দিঘার বিশ্ববাংলা উদ্যান ঘাটে বসেছিলেন। সঙ্গে স্ত্রী মনামি ও সাত বছরের ছেলে সোহম। তখনই সমুদ্রের জলে পা ধোবেন বলে একা উঠে যান সুপ্রিয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এরপর পা পিছলে কংক্রিটের ঘাটে পড়ে যান তিনি। বড় ঢেউ এলে তলিয়ে যান। মনামি বলছিলেন, ‘‘আমার স্বামীর পুরনো অফিসের এক সহকর্মীর সঙ্গে ওই সময় দেখা হয়। সুপ্রিয়কে বাঁচাতে গিয়ে উনিও তলিয়ে যাচ্ছিলেন। কোনওরকমে টাল সামলে পাড়ে উঠে এসেছেন।’’

Advertisement

ততক্ষণে অন্য পর্যটকদের চিৎকারে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের জনাকয়েক কর্মী ও পুলিশ হাজির হয়ে গিয়েছেন। তাঁরাই সমুদ্রে নেমে সুপ্রিয়র শরীরটা উদ্ধার করে আনে। দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

গত শনিবার ফ্রেজারগঞ্জে সমুদ্রে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। দিঘাতেও বারবার এমন ঘটনা ঘটছে। তারপরেও যে নজরদারি আঁটোসাঁটো হয়নি, রবিবারের ঘটনা তার প্রমাণ। পুলিশের দাবি, সন্ধে সাতটা পর্যন্ত নুলিয়া, পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল সৈকতে নজরদারি চালায়। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “রাতেও নজরদারি থাকে। কিন্তু পর্যটকরা নজর এড়িয়ে সমুদ্রে নেমে বিপত্তি ঘটান।’’

স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পর্যটক, সকলেই অবশ্য বলছেন, সন্ধে নামলে নজরদারি ঢিলেঢালা হয়ে যায়। আর রাতের দিকে তো পুলিশ বা নুলিয়া কাউকে সমুদ্রের ধারেকাছে দেখা যায় না। ঘটনা হল, দিঘার সৈকতে নজরদারি চালানোর লোক বলতে গোটা কুড়ি নুলিয়া আর বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ৯ জন কর্মী। এ ছাড়া দিঘা থানার পুলিশ কর্মীরা থাকেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন