রাতবিরেতে অসুস্থ হলে যাব কোথায়!

বর্তমানে বন্দর ও শিল্প শহরের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে এই টাউনশিপ এলাকা। ক্রমে বেড়েই চলেছে সেখানকার জনবসতি। অভিযোগ, কিন্তু এলাকায় জনসংখ্যা বাড়লেও এখানে নেই কোনও সরকারি হাসপাতাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ০৭:০০
Share:

অবহেলায়: ‘হিন্দুস্থান ফার্টিলাইজারে’র স্বাস্থ্যকেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র ।

দিন কয়েক আগে রাতে অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন হলদিয়া টাউনশিপের বাসিন্দা বিশ্বেশ্বর প্রামাণিক। মহকুমা হাসপাতাল এলাকা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। তাই শেষ পর্যন্ত স্থানীয় হাতু়ড়ের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল তাঁকে। শুধু বিশ্বেশ্বরবাবুর নন, এটা টাউনশিপের প্রায় সব বাসিন্দাদের কাছেই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

হলদিয়ার রানিচক থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গড়ে উঠেছিল টাউনশিপ। বর্তমানে বন্দর ও শিল্প শহরের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে এই টাউনশিপ এলাকা। ক্রমে বেড়েই চলেছে সেখানকার জনবসতি। অভিযোগ, কিন্তু এলাকায় জনসংখ্যা বাড়লেও এখানে নেই কোনও সরকারি হাসপাতাল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বন্দর এবং তৈল শোধনাগারের দু’টি হাসপাতাল ওই এলাকায় রয়েছে। কিন্তু সেখানে সংস্থার কর্মী এবং পরিবারের সদস্যরা পরিষেবা পান। ফলে, টাউনশিপের ব্রজনাথচক, দত্তেরচক, বিশ্বরামচক এলাকার বাসিন্দাদের ভরসা করতে হয় সেই ১৫ কিলোমিটার দূরের মহকুমা হাসপাতাল। আ তা না হলে এলাকার কোনও হাতুড়ে চিকিৎসক।

হলদিয়া পুরসভার অন্তর্গত টাউনশিপের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের বেলা যানবাহন জোগাড় করে হাসপাতাল যাওয়া সম্ভব হলেও রাতের বেলা পরিস্থিতি শোচনীয় হয়ে যায়। রাতে কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতাল য়াওয়ার গাড়িই মেলে না। এ রকম অবস্থার মুখে পড়েছিলেন টাউনশিপের বাসিন্দা বিশ্বেশ্বরবাবু। তিনি বলেন, ‘‘রাতে আচমকা রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল। হাসপাতাল এত দূর! যেতে পারিনি। তাই বাধ্য হয়ে স্থানীয় এক হাতুড়ে ডাক্তার ডেকে স্যালাইন নিয়ে সাময়িক সুস্থ হতে পারি।’’

Advertisement

রাত্রিকালীন এমন চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে অসন্তুষ্ট গোটা টাউনশিপ এলাকায়। এমন অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে টাউনশিপে একটি সরকারি হাসপাতাল বা কোনও চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে আসছিলেন তাঁরা। কিন্তু টাউনশিপে যেভাবে জনবসতি বাড়ছে, তাতে উপযুক্ত জমি প্রায় নেই বললেই চলে। তাই আপাতত হলদিয়ার বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা ‘হিন্দুস্থান ফার্টিলাইজার’ নামে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার স্বাস্থ্যকেন্দ্র ফের চালুর দাবি তুলে সরব হয়েছেন স্থানীয়েরা। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শয্যা, করিডর, অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা-সহ সব কিছু রয়েছে। কিন্তু তা পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ।

এ ব্যাপারে হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান শ্যামল আদকের বক্তব্য, ‘‘টাউনশিপে এমন কোনও জমি নেই, যেখানে সরকারি হাসপাতাল গড়ে তোলা সম্ভব। ওই জায়গার বাসিন্দাদের অসুবিধে ভেবে বিকল্প উপায় নেওয়া হচ্ছে।’’ অন্যদিকে টাউনশিপের বাসিন্দাদের অসুবিধের কথা মেনে নিয়েছেন হলদিয়া পুরকর্তৃপক্ষ। পুর পারিষদ (স্বাস্থ্য) আজিজুল রহমান বলেন, ‘‘ওই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। পরিত্যক্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুরসভাকে হস্তান্তর করা হলে, তা আধুনিমানের গড়ে তোলা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন