মিনারে জড়ানো প্লাস্টিক, পাত্তা নেই নজরদারির

নজরমিনার আছে তিনটি। তবে সেখান থেকে নজর রাখেন না কেউ।এমনকী দোলের সময় উপচে পড়া পর্যটকের ভিড় সামলাতেও পুলিশ ভরসা রেখেছে শুধু তাদের বাজখাই গলায়। এমনটিই অভিযোগ মন্দারমণিতে আসা পর্যটকদের।

Advertisement

শান্তনু বেরা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০০:৪১
Share:

ফাঁকা: সিলামপুরের নজরমিনার পড়ে অবহেলায়। নিজস্ব চিত্র

নজরমিনার আছে তিনটি। তবে সেখান থেকে নজর রাখেন না কেউ।

Advertisement

এমনকী দোলের সময় উপচে পড়া পর্যটকের ভিড় সামলাতেও পুলিশ ভরসা রেখেছে শুধু তাদের বাজখাই গলায়। এমনটিই অভিযোগ মন্দারমণিতে আসা পর্যটকদের।

পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য রীতিমত ঘটা করে মন্দারমণিতে তিনটি ‘ওয়াচ টাওয়ার’ বানিয়েছে ‘দিঘা–শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ’। সৈকতের উপর তারা উঁচু মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।

Advertisement

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিলামপুরের নজর মিনারটি। এখান থেকেই পর্যটকদের গাড়ি সমুদ্র সৈকতে নেমে হোটেলের দিকে যায়। সৈকতে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাই এখানে সব সময় পুলিশ মোতায়েন থাকে। তবে মিনারের উপরে নয়। নীচে দাঁড়িয়ে দিনভর পর্যটকদের উপর নজরদারি চালান মান্দারমণি উপকুল থানার সিভিক ভলান্টিয়াররা। আর লাগোয়া পানের দোকানের চেয়ারে পেতে বসে থাকে একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর। সেখান থেকে চড়া গলায় চিৎকার করে ট্রাফিক আইন ভাঙা গাড়িগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। তা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েন না পর্যটকরাও।

কোচবিহার থেকে দোলে বেড়াতে এসেছিলেন বেসরকারি ব্যাঙ্কের এক কর্মী। পুলিশের চিৎকার শুনে বলেই ফেললেন, “এ ভাবেই যদি চলে যায়, তাহলে নজরমিনারের সাধ কেন?’’ অথচ, দোল উপলক্ষে গত রবি, সোমবার সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়েছিল মন্দারমণিতে। যেখান থেকে পুলিশকর্মীদের নজরদারি চালানোর কথা, সেখানে কালো পলিথিন মুড়ে রাখা হয়েছে সারাদিন।

তবে কি ‘ওয়াচ টাওয়ার’ থেকে ‘ওয়াচ’ করা বন্ধ হয়ে গেল?

মন্দারমনি কোস্টাল থানার ওসি রাজকুমার দেবনাথের কথায়, “দোলের জন্য প্রচুর ভিড় হয়েছিল। পুলিশকর্মীরা অন্য জায়গায় ডিউটি করেছেন। তাই নজরমিনার বন্ধ রাখা হয়েছে।’’ রাজকুমারবাবুর দাবি, মন্দারমণির সৈকতে এখন অনেক সিসি ক্যামেরা বসানো আছে। ফলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

আর পলিথিন মুড়ে দেওয়ার বিষয়ে পুলিশের দাবি, দিনে ওখান থেকে নজরদারি চালানো হয় না। রাতে হয়। সে সময় ঠান্ডা হাওয়া থাকে। তাই পলিথিন দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে।

তবে এ সব যুক্তি মানতে নারাজ পর্যটকেরা। কলকাতার থেকে এসেছিলেন অজয় বসু রায়। তিনি বলেন, “ভিড় বাড়লেই তো নজর মিনারের দরকার হয় বেশি। এত দিন তো তেমনই শুনেছি। এ তো নতুন তথ্য!’’ হাওড়ার তপন হাজরা বলেন, “বিশাল এই সৈকতে কে কোথায় কী করছেন তা কি এই পানের দোকানে বসে দেখা যায়? সে জন্যই তো উঁচু থেকে দেখার ব্যবস্থা।’’

পুলিশের সঙ্গে একমত নন অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ বসুও। তিনি বলেন, “সিসি ক্যামেরা থাকলেও মিনার থেকে নজরদারি চালানো দরকার। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’’ একই কথা মনে করেন দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই নজরমিনার থেকে নজরদারি চালানো উচিত। দিঘার মতো মন্দারমণিতেও কংক্রিটের স্থায়ী মিনার বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement