স্কুলে নেই শৌচাগার, তাই ছুটতে হয় বাড়ি

স্কুল চলাকালীন পেট খারাপ হলে শৌচকর্মের জন্য ছাত্রদের ছুটতে হয় পাশের প্রাথমিক স্কুলে অথবা বাড়িতে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৮ ০৮:৩০
Share:

এমন নোংরা শৌচাগারই ভরসা স্কুলে।

স্কুল রয়েছে। কিন্তু সেখানে ছাত্রদের জন্য নেই শৌচালয়। ফলে স্কুল চলাকালীন পেট খারাপ হলে শৌচকর্মের জন্য ছাত্রদের ছুটতে হয় পাশের প্রাথমিক স্কুলে অথবা বাড়িতে।

Advertisement

কাঁথি থানার চন্দনপুর বীরেন্দ্র শিক্ষাসদনের পড়ুয়ারা গত এক বছর ধরে ওই সমস্যায় ভুগছেন। কো এডুকেশন ওই স্কুলটিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১১০০ জন। অভিযোগ, ছাত্রীদের জন্য শৌচালয় থাকলেও ছাত্রদের জন্য তা নেই। এতে স্কুলের ৪৯৫ জন ছাত্র প্রায় প্রতিদিনই বিপত্তিতে পড়েন। এছাড়া অভিযোগ, প্রস্রাবাগার থাকলেও পরিষ্কার না হওয়ায় সেটি প্রায় ব্যবহারের অযোগ্য। অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রের কথায়, “স্কুলে ভয়ে ভয়ে থাকি। ভাবি এই বুঝি পেট খারাপ হল। আর তাহলেই বাড়ির দিকে ছুট লাগাতে হবে।’’

কাঁথি পশ্চিম চক্রের অন্তর্গত ওই স্কুলটি ১৯৪৮ সালে স্থাপিত হয়। বিদ্যালয় সূত্রে প্রকাশ, বছর খানেক আগে পুরনো বিল্ডিংয়ের একতলার তিনটি এবং দু’তলার তিনটি শ্রেণিকক্ষ ভেঙে পড়েছিল। ভেঙেছিল ছাত্রছাত্রীদের শৌচাগার। বছর তিনেক আগে থেকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত প্রস্রাবাগার ও শৌচালয় বানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাত্রদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বদলায়নি।

Advertisement

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীলকুমার গিরি ছাত্রদের শৌচাগার না থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “বছর খানিক আগে পুরাতন বিল্ডিংয়ের ছয়টি কক্ষ ভেঙে পড়েছিল। তারপর আর্থিক অভাবে ছাত্রদের নতুন শৌচাগার তৈরি করা সম্ভব হয়নি। মেরামতির নতুন কোনও অনুদানও পাওয়া যায়নি।’’ প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘ছাত্রদের অসুবিধা আমরা শিক্ষকেরা বুঝতে পারি। বিষয়টি কাঁথির মহকুমাশাসক থেকে সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় জানিয়েছি।’’

বিদ্যালয়ের সহ-শিক্ষক দেবাশিস দাস বলেন, “প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ক্লাসের মাঝেই ছাত্রদের ছেড়ে দিতে হয়। এতে ওদের পড়াশোনাতেও কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে।’’ প্রস্রাবাগার পরিষ্কার প্রসঙ্গে স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, এই কাজের জন্য বিদ্যালয়ে কোনও গ্রুপ ডি কর্মী নেই।

শুধু শৌচাগার নয়, বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের অভাব রয়েছে বলেও কর্তৃপক্ষের দাবি। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি ক্লাসে দু’টি করে সেকশন রয়েছে। শ্রেণি কক্ষের অভাব থাকায় প্রতি ক্লাসে দু’টো সেকশনের পঠনপাঠন একটি রুমের মধ্যেই হয় বলে জানা গিয়েছে।

বিদ্যালয়ে শৌচাগার নির্মাণের বিষয়টি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের ‘মিশন নির্মল বাংলা’ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। এ নিয়ে জেলা কর্মাধ্যাক্ষ পার্থপ্রতিম দাস বলেন, “আমাদের কাছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন করুক। যত শীঘ্র সম্ভব শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন