নিয়ম শিকেয়, জ্যাকেট ছাড়াই দিঘিতে প্রমোদ ভ্রমণ

সেই নিয়মকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে লাইফ জ্যাকেট ছাড়া ‘বোটিং’ করার অভিযোগ উঠেছে মহিষাদল রাজবাড়ির পুকুরের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহিষাদল শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৩১
Share:

সামনেই পড়ে জ্যাকেট। তা না পরেই নৌকা ভ্রমণ। —নিজস্ব চিত্র।

সাইনবোর্ডে বড় বড় করে লেখা রয়েছে— ‘লাইফ জ্যাকেট ছাড়া বোটে চাপা নিষিদ্ধ’। কিন্তু সেই নিয়মকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে লাইফ জ্যাকেট ছাড়া ‘বোটিং’ করার অভিযোগ উঠেছে মহিষাদল রাজবাড়ির পুকুরের।

Advertisement

পর্যটনকে জোর দিতে মহিষাদল রাজবাড়ি সংলগ্ন বিশাল ‘সোয়াদিঘি’তে দু’টি নৌকায় ভ্রমণের ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রতিটি নৌকায় ২০ মিনিট ধরে এক সঙ্গে চার জন ঘুরে দেখতে পারেন গোটা পুকুর। এ জন্য ২০ টাকা টিকিট মূল্য ধার্য করা হয়েছিল। বোট দু’টি চালানোর জন্য স্থানীয় এক ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেয় পঞ্চায়েত সমিতি। সেখানে লিখিত চুক্তিতে বলা হয়েছিল, লাইফ জ্যাকেট ছাড়া কাউকে বোটে চাপতে দেওয়া হবে না।

গত ২৫ ডিসেম্বর ‘বোটিং’ পরিষেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন পুলিশ এবং প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। উদ্বোধনের দিনে প্রশাসনিক আধিকারিকেরা নিয়ম মতো লাইফ জ্যাকেট পরেই করেছিলেন ‘বোটিং’। তাঁদেরও উদ্যেশ্য ছিল, আমজনতাকেও লাইফ জ্যাকেটের বিষয়ে সচেতন করা। কিন্তু মাসও ঘোরেনি, তার আগেই পর্যটকদের মধ্যে দেখা গিয়েছে অনিয়মের চিত্র।

Advertisement

স্থানীয়েরা অভিযোগ করেছেন, সম্প্রতি লাইফ জ্যাকেট না পরেই নৌকা-ভ্রমণ করছেন পর্যটকেরা। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্খা থেকেই যাচ্ছে। হলদিয়া থেকে সপরিবার বেড়াতে এসেছিলেন মনোজ সামন্ত নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানতাম না ওই বোটে চাপলে লাইফ জ্যাকেট পরতে হয়। তাছাড়া, যাঁরা এর দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁরাও এ ব্যাপারে সতর্ক করেননি। তাই জ্যাকেট ছাড়ায় বোটে ঘুরলাম।’’ আবার পর্যটকদের একাংশের দাবি, একই লাইফ জ্যাকেট সবাইকে পরতে হয়। নোংরা জ্যাকে়ট পরতে হবে বলেও তাঁরা জ্যাকেট এড়িয়ে যান।

পর্যটকদের কেন জ্যাকেটের ব্যাপারে সতর্ক করা হয় না, তা জানতে চেয়ে ফোন করা হয়েছিল ওই বোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা হারাধন মান্না এক ব্যক্তিকে। তবে তাঁর মোবাইল পরিষেবা সীমার বাইরে থাকায় তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান যায়নি। অন্য দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোটের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে যুক্ত এক কর্মী বলেন, ‘‘পর্যটকদের লাইফ জ্যাকেট পরতে বলা হয়। কিন্তু সতর্ক করা হলেও তাঁরা মানতে চান না।’’

অনেকের ব্যবহার করা ‘নোংরা’ জ্যাকেট থেকে রোগ ছড়াতে পারে— পর্যটকদের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ব্যবহৃত লাইফ জ্যাকেটে থেকে রোগ হতে পারে কি না, সে বিষয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’ তবে জ্যাকেট ছাড়া ‘বোটিং’য়ের অভিযোগ শুনে বিডিও জয়ন্তকুমার দে বলেন, ‘‘দ্রুত খোঁজ নিয়ে দেখছি। এমন অনিয়ম কোনও ভাবে বরদাস্ত করা হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন