বন্ধ: রাতে ঝাঁপ বন্ধ ঝাড়গ্রামে ওষুধের দোকানের। নিজস্ব চিত্র
নতুন জেলা হওয়ার আগেই চালু হয়েছে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। তবে অনেক সময়ই সেখানে ওষুধ-ইঞ্জেকশন থাকে না। হাসপাতাল চত্বরের ন্যায্য মূল্যের দোকানেও সব সময় দরকারি ওষুধ পাওয়া যায় না। বিশেষ করে রাতবিরেতে ভরসা বেসরকারি ওষুধের দোকান। কিন্তু তা-ও খোলা থাকে না। আর তাতেই ভোগান্তি বাড়ে রোগীর পরিজনেদের।
বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিসিডিএ)-এর নথিভুক্ত ৩৫টি ওষুধ দোকান আছে ঝাড়গ্রাম শহরে। মহকুমাশাসকের উদ্যোগে এবং ওষুধের দোকানের মালিকদের সংগঠনের সহযোগিতায় প্রতি রাতে ঝাড়গ্রাম শহরে পর্যায়ক্রমে একটি করে দোকান খোলা রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। সংগঠনের তরফে কবে কোন দোকান রাতে খোলা থাকবে, তার মাসিক তালিকা মহকুমাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মহকুমাশাসক সেই তালিকা ঝাড়গ্রাম থানা, জেলা ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। রাতে দোকান খোলা রাখতে গিয়ে যাতে নিরাপত্তার সমস্যা না হয়, সে জন্য সারা রাত দোকানের সামনে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন থাকেন। কিন্তু এত ব্যবস্থার পরেও রাতে ওষুধের দোকান খোলা থাকছে না বলে অভিযোগ।
কেন রাতে দোকান খোলা থাকছে না?
বিসিডিএ-এর ঝাড়গ্রাম জোনাল সম্পাদক কাশীনাথ দত্তের অবশ্য দাবি, “কই তেমন অভিযোগ তো পাইনি। ব্যক্তিগত সমস্যার জন্য রবিবার হয়তো সংশ্লিষ্ট দোকানটি খোলা হয়নি। খোঁজ নিয়ে দেখব।” তিনি জানালেন, রবিবার রাতে ওষুধের খোঁজে এক রোগীর পরিজন তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু কাশীবাবুর দোকানে ওষুধটি ছিল না। শহরের সব দোকানে সব ওষুধ পাওয়া যায় না। সে জন্য রাতে সমস্যায় পড়ছেন রোগীর বাড়ির লোকেরা। রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, হাসপাতাল চত্বরের কয়েকটি দোকান ছাড়া অন্য দোকানগুলিতে জীবনদায়ী ওষুধ সব সময় মেলে না। ফলে ব্যবস্থার মধ্যে অনেক ত্রুটি রয়েছে। এ জন্য আমজনতাকে হয়রান হতে হচ্ছে।
ওষুধ দোকান মালিকদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, রাতের বেলা দোকান খোলা রাখলে বাড়তি খরচ হচ্ছে। অথচ সেই অনুপাতে ওষুধ বিক্রিই হয় না। আবার এমন ওষুধের খোঁজে লোকজন আসেন, যা স্টকে থাকে না। শহরের এক প্রান্তের এক ওষুধ দোকানের মালিক বলেন, “গত তিন বছর নিয়মিত প্রতি মাসে একবার দোকান খোলা রেখে মাত্র তিনবার রাতে ওষুধ বিক্রি করেছি। জীবনদায়ী মূল্যবান ওষুধ রেখে এভাবে ক্ষতি পোষানো সম্ভব নয়।” পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, রাতের বেলা তালিকা ভুক্ত দোকানে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, দোকান বন্ধ রয়েছে, তখন পুলিশ ও সিভিক কর্মীরা ফিরে আসছেন।
ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক (সদর) নকুলচন্দ্র মাহাতো বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। সমস্যা মেটাতে পদক্ষেপ করব।”