খাড়া তাই না-পসন্দ, ঝুঁকি নিয়েই চলে লাইন পারাপার

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর-টাটানগর শাখার রেল লাইন দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশো দূরপাল্লার ট্রেন ও মালগাড়ি চলাচল করে। এর মধ্যে ঝাড়গ্রাম স্টেশনে সারাদিনে এক্সপ্রেস, প্যাসেঞ্জার ও লোকাল মিলিয়ে আপ ও ডাউনে ১৫ জোড়া ট্রেন থামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ১২:৪০
Share:

বিপজ্জনক: রোজ এ ভাবেই চলে লাইন পারাপার। নিজস্ব চিত্র

স্টেশনে রয়েছে ফুট ওভারব্রিজ। কিন্তু বেশিরভাগ যাত্রী সেদিকে পা মাড়ান না। রেললাইন পেরিয়ে বিপজ্জনক ভাবে প্ল্যাটফর্মে ওঠানামা করেন যাত্রীদের একাংশ। প্রতিদিনই প্ল্যাটফর্মে ট্রেন থামলেই ঝাড়গ্রাম রেল স্টেশনে দেখা যায় এই ছবি। এক নম্বর ও চার নম্বর প্ল্যাটফর্মের দুই প্রান্তে লোহার গার্ডরেল রয়েছে। কিন্তু গার্ডরেলগুলির মাঝে যথেষ্ট ফাঁক থাকায় অবাধে লাইন পেরিয়ে প্ল্যাটফর্মে উঠে পড়েন যাত্রীরা। আবার ট্রেন থেকে নামার পরে একই ভাবে ওভারব্রিজে না উঠে যাত্রীরা লাইন পেরিয়ে স্টেশন থেকে বেরিয়ে যান। দিনের পর দিন এ ভাবেই যাতায়াত চললেও এবং তার জন্য দতুর্ঘটনা ঘটলেও রেলের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর-টাটানগর শাখার রেল লাইন দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশো দূরপাল্লার ট্রেন ও মালগাড়ি চলাচল করে। এর মধ্যে ঝাড়গ্রাম স্টেশনে সারাদিনে এক্সপ্রেস, প্যাসেঞ্জার ও লোকাল মিলিয়ে আপ ও ডাউনে ১৫ জোড়া ট্রেন থামে। প্রতিদিন গড়ে আড়াই-তিন হাজার যাত্রী এই স্টেশনে যাতায়াত করেন। বিশেষত, ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে টাটাগামী আপ কোনও ট্রেন থামার পরে আইন ভাঙার হিড়িক বেশি দেখা যায়। ট্রেন থেকে নামার পরে ফুট ওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে বেশিরভাগ যাত্রীই এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে নেমে লাইন পেরিয়ে গার্ডরেলের ফাঁক দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যান। স্টেশন চত্বরে একটি দোকানের মালিক রবি ঘোষ বলেন, “শিক্ষিত মানুষজনকে এভাবে আইন ভাঙতে দেখে খুবই খারাপ লাগে। তা ছাড়া দুর্ঘটনার আশঙ্কা তো রয়েইছে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম পাইকারি আনাজ বাজার থেকে প্রতিদিন ট্রেনে আনাজ যায় ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে। আনাজের পাইকার ব্যবসায়ীরা আনাজের বস্তা নিয়েই লাইন পেরিয়ে ট্রেন ধরতে যান। ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করা নিয়ে যাত্রীদের একাংশের যুক্তি, খাড়াই ফুটওভার ব্রিজে উঠতে হাঁফ ধরে যায়। তার চেয়ে লাইন পেরিয়ে প্ল্যাটফর্মে যাতায়াত করা অনেক সহজ।

Advertisement

জেলা শহর ঘোষণা হওয়ার পরে ঝাড়গ্রামের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গিয়েছে। ট্রেনের যাত্রীসংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে স্টেশনের দু’প্রান্তের গার্ড রেলগুলির ফাঁক বন্ধ করার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে বলে রেল সূত্রে জানানো হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “গার্ডরেলগুলি জুড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হবে। তা হলে যাত্রীরা আর লাইন পেরিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন না। বাধ্য হবেন ফুট ওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে।’’

তবে ইতিমধ্যেই প্রবীণ নাগরিকদের স্বার্থে প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার জন্য সাবওয়ে তৈরির দাবি উঠেছে। ঝাড়গ্রাম ওল্ড বয়েজ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিষ্ণুপদ রায়ের কথায়, ‘‘ওভার ব্রিজে উঠতে প্রবীণদের খুবই কষ্ট হয়। সে ক্ষেত্রে প্ল্যাটফর্মে যেতে সাবওয়ে তৈরির জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন