নার্সের মৃত্যুতে ক্ষোভ, ঘেরাও অধ্যক্ষ

তৃপ্তিদেবীর মৃত্যুর পরে ক্ষুব্ধ নার্সদের তাই প্রশ্ন, ওই ঘটনায় সব দিক খতিয়ে দেখার আগেই নার্সকে সাসপেন্ড করা গেলে এ ক্ষেত্রে কেন অভিযুক্ত চিকিৎসকদের সাসপেন্ড, নিদেনপক্ষে শো-কজ করা হবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০০
Share:

ক্ষোভ: হাসপাতালে ঘেরাও অধ্যক্ষ। বৃহস্পতিবার। ছবি:সৌমেশ্বর মণ্ডল।

চিকিৎসায় গাফিলতিতে নার্সের মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে সহকর্মীদের ক্ষোভ চরমে পৌঁছল মেদিনীপুর মেডিক্যালে। ক্ষুব্ধ নার্সদের হাতে রাতভর ঘেরাও হয়ে থাকলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু। গাফিলতিতে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বুধবার দুপুর থেকে এই ঘেরাও-বিক্ষোভ চলছে। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ঘেরাও উঠলেও বিক্ষোভ থামেনি। অবস্থান শুরু হয়েছে নার্সিং সুপারের অফিসের সামনে। আন্দোলনরত ‘নার্সেস ইউনিটি’র রাজ্য সম্পাদিকা পার্বতী পাল বলেন, “চিকিৎসায় গাফিলতি না হলে ওই মৃত্যু হত না। তাহলে কেন অভিযুক্ত চিকিৎসকদের সাসপেন্ড করা হবে না?”

Advertisement

নার্সদের বিক্ষোভ বা অধ্যক্ষ ঘেরাও, মেদিনীপুর মেডিক্যালে মেডিক্যালে আগেও হয়েছে। তবে একটানা চব্বিশ ঘণ্টারও বেশি ঘেরাও হয়ে থাকার নজির সাম্প্রতিক অতীতে নেই। স্নান-খাওয়া সব করতে পারলেও বুধবার দুপুর থেকে এ দিন সন্ধে পর্যন্ত অফিস থেকে বেরোতে দেওয়া হয়নি অধ্যক্ষ পঞ্চাননবাবুকে। সমস্যা হচ্ছে না? পঞ্চাননবাবুর জবাব, “কিছু সমস্যা হয়েছে ঠিকই। তবে নাইট ডিউটির অভ্যাস রয়েছে তো।” তিনি আরও বলেন, “আমরা তদন্ত কমিটি গড়েছি। কমিটির রিপোর্ট দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঘটনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার। ওই দিন ভোরে তৃপ্তি দিন্দা নামে এক নার্সের মৃত্যু হয় মেদিনীপুর মেডিক্যালে। তৃপ্তিদেবী এই হাসপাতালেরই এসএনসিইউতে কর্মরত ছিলেন। বমি ও মাথায় যন্ত্রণা নিয়ে গত শনিবার তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। সোমবার তাঁর এমআরআই করানোর কথা ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। অর্থাৎ ওই নার্সের রোগ নির্ণয়ই হয়নি বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর থেকেই দফায় দফায় নার্সদের বিক্ষোভ শুরু হয়। গত মঙ্গলবার হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজাকে ঘেরাও করেন ক্ষুব্ধ নার্সরা। বুধবার দুপুর থেকে শুরু হয় অধ্যক্ষকে ঘেরাও। সপ্তাহ কয়েক আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ দেওয়ায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগের জেরে এক নার্সকে সাসপেন্ড করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। তৃপ্তিদেবীর মৃত্যুর পরে ক্ষুব্ধ নার্সদের তাই প্রশ্ন, ওই ঘটনায় সব দিক খতিয়ে দেখার আগেই নার্সকে সাসপেন্ড করা গেলে এ ক্ষেত্রে কেন অভিযুক্ত চিকিৎসকদের সাসপেন্ড, নিদেনপক্ষে শো-কজ করা হবে না।

Advertisement

এই ঘটনায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে ইতিমধ্যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে বলে মেডিক্যাল সূত্রে খবর। আজ, শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের একটি দলের মেদিনীপুর মেডিক্যালে আসার কথা রয়েছে। দলে থাকতে পারেন স্পেশ্যাল সেক্রেটারি এবং ডেপুটি ডিরেক্টর পদমর্যাদার দুই আধিকারিকও। নার্সদের আন্দোলনের জেরে মেদিনীপুর মেডিক্যালের চিকিৎসা পরিষেবা কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। যদিও আন্দোলনকারী সংগঠনের তরফে সঞ্চিতা সূত্রধরের দাবি, “আমরা কর্মবিরতি করছি না। পরিষেবা চালু রেখেই আন্দোলন হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement