বন্ধ: বেচাকেনা বন্ধ এই কৃষক বাজারে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
ঝাঁ চকচকে স্টল, গুদামঘর। নীল-সাদা রঙের ঘরগুলোর পাশেই পণ্যবাহী গাড়ি রাখার জায়গা। অথচ ঘরের দরজায় তালা। উদ্বোধনের পর ফাঁকাই পড়ে পাঁশকুড়া কৃষক বাজার। কবে এই বাজার চালু হবে তা কারও জানা নেই! পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খানের আশ্বাস, “কৃষক বাজারে পাইকারি সব্জি বাজার নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।” এক পুরকর্তার কথায়, “পাঁশকুড়া স্টেশন বাজার এলাকায় যে সব্জি বাজার বসে সেখানে পাইকারি ও খুচরো বেচাকেনা চলে। পাইকারি বাজার ওই কৃষক বাজারে যাবে। স্টেশন বাজারের কাছে খুচরো সব্জি বাজার চালু থাকবে।”
রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে একটি করে কৃষক বাজার ( ঘোষণার সময় নাম দেওয়া হয়েছিল কিসান মান্ডি) তৈরির পরিকল্পনা করে রাজ্য সরকার। মাস পাঁচেক আগে পাঁশকুড়াতেও কৃষক বাজার গড়ে ওঠে। খরচ হয় প্রায় ছ’কোটি টাকা। পাঁশকুড়ায় সব্জি চাষের ব্যাপকতা ও স্টেশন সংলগ্ন সব্জি বাজারের গুরুত্ব দেখে পাঁশকুড়া স্টেশন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ঘাটালগামী সড়কের ধারে এই কৃষক বাজার তৈরি করা হয়। শিয়ালদহের কোলে মার্কেটের পরে রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম সব্জি বাজার হিসেবে গণ্য এই পাঁশকুড়া স্টেশন সংলগ্ন বাজার। আশির দশক থেকে পাঁশকুড়া সব্জি বাজারের রমরমা শুরু।
পাঁশকুড়া ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনা, ডেবরা, খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার কৃষকদের সব্জির বেচাকেনার অন্যতম গন্তব্য এই বাজার। দিনভর ব্যবসা চলে। স্থানীয় সূত্রে খবর, একাংশ ব্যবসায়ীই কৃষক বাজারে যেতে চাইছেন না। এই ব্যবসায়ীদের ধারণা, কৃষক বাজারে গেলে বেচাকেনা কমে যাবে! সত্যিই কি তাই? পাঁশকুড়া স্টেশন বাজার কৃষি পণ্য ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মানিকলাল দে- র জবাব, “আমি এ নিয়ে কোনও কিছুই বলব না!”
অথচ, খোলা আকাশের নীচে ব্যবসা করতে নানা অসুবিধের মধ্যে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের। বিশেষ করে বর্ষাকালে বাজারে চলাফেরা করা দায় হয়ে পড়ে। শীতকালেও জিনিসপত্র নিয়ে কুয়াশার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় কৃষকদের। এক পুরকর্তার কথায়, “আমরা চাই কৃষক বাজার দ্রুত চালু হোক। সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাজারের পরিকাঠামো তৈরি করেছে। তা পড়ে থাকলে সকলের খারাপ লাগবে। আর ওই বাজার চালু হলে ব্যবসায়ীরা অনেক সমস্যা থেকে রেহাই পাবে।”