ছেলে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছে। শুরুতে এতটুকুই জানা ছিল পরিবারের। কিন্তু রাত ৩টে নাগাদ আসা ফোনের পরে বাবা-মায়ের বদ্ধমূল বিশ্বাস, ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। তারপর থেকে রাতের ঘুম তো বটেই,নাওয়া-খাওয়া মাথায় উঠেছে পরিবারের।
পরীক্ষার শেষেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুজিত বায়েনের। রবিবার রাতে ফোন করে বাবা ও মাকে সে কথা জানিয়েছিল খোকন (সুজিতের ডাকনাম)। নিয়ম করেই বৌদি এবং দুই দাদাকে ফোন করত সুজিত। সোমবার বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ বাবা-মা জানতে পারেন সুজিত পরীক্ষা দিতে যায়নি। তা হলে কোথায় গেল সে? সুজিতের মা চন্দনাদেবী মঙ্গলবার কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “ছেলে বলেছিল,আমি বড় অফিসার হব। মাধ্যমিকে তাই ভাল ফল করতে হবে। সেই ছেলে আমার কোথায় গেল?” বাবা অনুকূলবাবুর কথায়, “ভালভাবে পড়াশোনা করার জন্যই ঘাটালে পাঠিয়েছিলাম। ওখানে টিউশনি-সহ সমস্ত সুযোগই ভাল। সব ঠিকঠাকই তো ছিল এতদিন।”
ক্লাস এইটের পরই চন্দ্রকোনার ভৈরবপুর হাইস্কুল থেকে ঘাটাল শহরের সৎসঙ্গ শ্রী যুক্তেশ্বর বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলে ভর্তি হয় সুজিত। চুপচাপ,শান্ত এবং মেধাবী ছেলে বলেই পরিচিত ছিল সে। টেস্টে ৬৩৫ নম্বর পেয়েছিল। সহপাঠীরা জানিয়েছে, সুজিতের প্রস্তুতিও ছিল ভাল। সুজিতের বাবা আলুর ব্যবসা করেন। অনুকূলবাবুর দু’বার বিয়ে। প্রথম পক্ষের দুই ছেলে। চন্দনা দেবীর সন্তান সুজিত। দুই দাদা-সহ বাড়ির সকলের সঙ্গেই তার ভাল সম্পর্ক ছিল বলে পড়শিরা জানিয়েছে। সুজিত দিন দশেক আগেই বাড়ি গিয়েছিল। নাতিকে খুঁজে পাওয়া না যাওয়ায় মুষড়ে পড়েছেন ঠাকুমা দুর্গা বায়েনও। একই অবস্থা পড়শিদেরও। সকলের স্থির বিশ্বাস— পুলিশ ঠিক খুঁজে বার করবেই আদরের খোকনকে।