শালবনিতে শুরু হয়েছে জমি ঘেরার কাজ। নিজস্ব চিত্র।
ব্লকের সদর শহর। অথচ, বিনোদনের তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। মুক্ত হাওয়ায় ঘুরে বেড়ানোর মতো পার্ক পর্যন্ত নেই। বিকেলে ঘোরার ইচ্ছে হলে বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলেই যান রেল স্টেশনে।
এই অবস্থা শালবনির। আগে স্টেশনের আশপাশের এলাকা ফাঁকা ছিল। খোলা হাওয়ায় ঘোরার কিছুটা সুযোগ ছিল। এখন সেখানে গজিয়ে উঠেছে বসতি, দোকান-বাজার। শালবনির মানুষ তাই বহু দিন ধরেই একটি পার্ক তৈরির দাবি জানিয়েছিলেন। যেখানে কচিকাঁচারা খেলতে পারবে, বয়স্করাও সময় কাটাতে পারবে। অবশেষে সেই দাবি মিটতে চলেছে। পার্ক তৈরির পরিকল্পনা করেছে পঞ্চায়েত সমিতি। ব্লক অফিসের উল্টো দিকে বেশ কিছুটা সরকারি জমি ছিল। তার থেকে ৩ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে পার্কের জন্য। পার্কের জন্য বেড়া দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ বলেন, ‘‘এলাকাবাসীর দাবি মেনে বয়স্কদের বেড়ানো, ছোটদের খেলাধুলোর জন্যই এই উদ্যোগ।’’
পঞ্চায়েত সমিতি জানিয়েছে, একশো দিনের কাজের প্রকল্প, জঙ্গলমহল অ্যাকশন প্ল্যান, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর থেকে শুরু করে উদ্যান পালন দফতর— বিভিন্ন দফতরের অর্থানুকূল্যে তৈরি হবে পার্ক। কোনও খাতের টাকায় বেড়া দেওয়া তো কোনও খাতের টাকায় ফুল-ফলের গাছ লাগানো হবে। তৈরি করা হবে হাঁটার জন্য প্রশস্ত রাস্তা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য মুক্ত মঞ্চ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। ছোটদের জন্য থাকবে স্লিপ, দোলনা-সহ খেলার নানা সরঞ্জাম। সব মিলিয়ে আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৩ লক্ষ টাকা। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষের চেষ্টা চলছে বলে পঞ্চায়েত সমিতি জানিয়েছে।
পার্ক তৈরির খবরে খুশি এলাকার মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা ঋতুপর্ণা পালের কথায়, “ছোট্ট বাচ্চা রয়েছে। খেলার জন্য একটু খোলামেলা পরিবেশ তো জরুরি। পার্ক হলে ভীষণ উপকার হবে।” ষাটোর্ধ্ব নিরঞ্জন রায়ও বলেন, ‘‘পার্ক না থাকায় সন্ধের পর বাধ্য হয়েই স্টেশনে গিয়ে বসি। স্টেশনে নানা রকমের মানুষের যাতায়াত, হৈ-হল্লা। পার্ক হলে নিজেরা তো বটেই সঙ্গে নাতি-নাতনিকেও আনা যাবে।’’
কিন্তু পার্ক তৈরি করতে এত দেরি হল কেন? তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির অভিযোগ, আগে সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতি এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়নি। তৃণমূল ক্ষমতায় এসে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়। কিন্তু অর্থের সংস্থান করতে কিছুটা সময় লেগে গিয়েছে।