আদিবাসী, মূলবাসীদের ক্ষোভ সামলাতে আসরে নামলেন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা। শনিবার ঝাড়গ্রাম শহরের পাঁচমাথা মোড়ে জেলা তৃণমূল আয়োজিত এক সভায় যোগ দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দলের সভাপতি সুব্রত বক্সী, সাংসদ মানস ভুঁইয়া, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো, রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, ঝাড়গ্রামের সাংসদ উমা সরেন, বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা-সহ ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রথম সারির নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা।
প্রায় সকলেই একসুরে জানান— জঙ্গলমহলের আদিবাসী-মূলবাসীরা মুখ্যমন্ত্রীর চোখের মণি। কিন্তু তাঁদের বিভ্রান্ত করে জঙ্গলমহলে অশান্তির পরিবেশ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। কোনও প্ররোচনার ফাঁদে যেন না তাঁরা পা না দেন। বিজেপি ও সিপিএমের ‘যুক্ত কমিটি’ জঙ্গলমহলে অশান্তির ইন্ধন জোগাচ্ছে বলে সরাসরি অভিযোগও করেন পার্থ চট্টোপাধায়।
তৃণমূল সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তড়িঘড়ি পুজোর আগে দলের এই সভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহলে আদিবাসী-মূলবাসী আবেগ উস্কে দিয়ে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শানাচ্ছে। মাওবাদী প্রভাবও বাড়ছে।
কিছুদিন আগে আদিবাসীরা নানা দাবিতে বিক্ষোভ জমায়েত করেছিল। সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে ক্ষোভ রয়েছে আদিবাসী মহলে। ২০ সেপ্টেম্বর তিন রাজ্যে কুড়মি সম্প্রদায়ের ডাকা ‘ডহর ছেঁকা’ (রাস্তা অবরোধ) কর্মসূচিতে জঙ্গলমহল অচল হওয়ার আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তড়িঘড়ি বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিনটিকেই সভা করার জন্য বেছে নেওয়া হয়।
এ দিন পার্থবাবু বলেন, ‘‘গত ২৬ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী ৩১ জনের ‘কুড়মি ওয়েলফেয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড’ গঠন করে দিয়েছেন। পুজোর পরে নামের তালিকা প্রকাশ করে সার্বিক উন্নয়নের কাজ হবে।’’ তিনি জানান, আদিবাসী সংগঠনগুলি এগিয়ে এসে সিলেবাস অনুবাদের ব্যবস্থা করে দিলে রাজ্য সরকার সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি লিপিতে বি-এড কোর্স চালু করতে আগ্রহী।
পার্থবাবু অভিযোগ করেন, আদিবাসীদের নাম করে রাতের অন্ধকারে সরকার বিরোধী লিফলেট ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘অন্ধকারে লিফলেট না ছড়িয়ে সরাসরি বলুন কী চাই? আর কী উন্নয়ন বাকি রয়েছে সেটা বলুন।’’ সুব্রত বক্সী বলেন, পুজোর পরে ফের ঝাড়গ্রামে লক্ষাধিক মানুষের সভা হবে।
সবশেষে জেলার মন্ত্রী ও ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি চূড়ামণি মাহাতোর আবেদন করেন, “মুখ্যমন্ত্রী আপনাদের উন্নয়নে ভরিয়ে দিয়েছেন। গুজবে কান দেবেন না।”