চলন্ত ট্রেনে ডিম বিক্রেতার ছুরিতে ঘায়েল যাত্রী 

খড়্গপুর স্টেশনে ট্রেন পৌঁছলে ওড়িশার ভদ্রকের বাসিন্দা বাবনকে রেলের অপরাধদন শাখার হাতে তুলে দেয় যাত্রীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

ছুরির ঘায়ে আহত ফইজুল হক ( বাঁ দিকে)। অভিযুক্ত বাবন মাজি (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র

ট্রেনে আরপিএফ ছিল না, সেই সুযোগে এক যাত্রীকে ছুরির ঘায়ে জখম করার অভিযোগ উঠল হকারের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার শালিমারগামী গুরুদেব এক্সপ্রেসে ভদ্রক ও বালেশ্বর স্টেশনের মাঝে সিদ্ধ ডিম বিক্রেতা বাবন মাজি অসমের গুয়াহাটির বাসিন্দা ফইজুল হকের ডান হাতে ছুরি চালায় বলে অভিযোগ।

Advertisement

খড়্গপুর স্টেশনে ট্রেন পৌঁছলে ওড়িশার ভদ্রকের বাসিন্দা বাবনকে রেলের অপরাধদন শাখার হাতে তুলে দেয় যাত্রীরা। এর পরে অপরাধদমন শাখার আধিকারিকরা অভিযোগকারী ও অভিযুক্তকে রেল পুলিশের কাছে নিয়ে যায়। তবে ঘটনাস্থল রেলের অন্য শাখায়, এই যুক্তিতে রেল পুলিশ ফইজুল হকের অভিযোগ নেয়নি বলে দাবি। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফইজুল হক ও তাঁর দাদা আব্দুল করিম কেরলের আলুভা শহরে একটি শপিং মলের কর্মী। গুয়াহাটিতে ভোট থাকায় ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। গত রবিবার আলুভা স্টেশন থেকে নেল্লোর-শালিমার গুরুদেব এক্সপ্রেসে ওঠেন তাঁরা। অভিযোগ, ওই ট্রেনে কোনও আরপিএফ ছিল না। এতেই বাড়ে বিপদ। এ দিন ভদ্রক থেকে বালেশ্বর যাওয়ার পথে ট্রেনে ওঠেন সিদ্ধ ডিম বিক্রেতা বাবন মাজি। ওই হকারের থেকে সিদ্ধ ডিম কেনেন ফইজুল। তারপরেই টাকা মেটাতে গিয়ে ওই হকারের সঙ্গে ফইজুলের বচসা বাধে। অভিযোগ, বাবন নামে ওই হকার ডিমের ক্যারেট রেখে ফইজুলের মানিব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। সেই সময় ফইজুল ওই হকারকে পাকড়াও করলে পকেট থেকে ছুরি বের করে বাবন। তার পরে সে ছুরি দিয়ে ফইজুলের ডান হাতের আঙুলে আঘাত করে।

ঘটনার পরেই সহযাত্রীরা ছুটে এসে বাবন মাজিকে পাকড়াও করে। যদিও সেই সময়ের মধ্যেই অন্য একজনের কাছে ওই টাকার ব্যাগ ও মোবাইল বাবন হাতবদল করে দেয় বলে অভিযোগ। যাত্রীদের দাবি, সেই সময় কোনও আরপিএফের দেখা পাওয়া যায়নি। তাই খড়্গপুর পর্যন্ত বাবনকে নিয়ে আসা হয়। জখম ফইজুলের দাদা আব্দুল করিমের অভিযোগ, “ওই হকারকে টাকা দেওয়ার সময় আমার ভাইয়ের মানিব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে পালাচ্ছিল। তখন ভাই ওই হকারকে ধরলে ছুরি চালায়।”

Advertisement

খড়্গপুরে অপরাধদমন শাখা দু’পক্ষকে নিয়ে রেল পুলিশে অভিযোগ জানাতে যায়। কিন্তু রেল পুলিশ অভিযোগ নেয়নি বলে দাবি অপরাধদমন শাখার। খড়্গপুর রেল পুলিশের আইসি শুভাশিস বণিক বলেন, “১৮৩ সিআরপিসি অনুযায়ী, অভিযোগ যে কোনও থানায় করা গেলেও মামলা হবে ঘটনাস্থল যে এলাকায় সেখানকার আদালতে। আর এই ঘটনাটি আমাদের শাখায় নয়। ওড়িশার বালেশ্বর এলাকায় ঘটেছে। তাই সঙ্গে অভিযুক্ত থাকায় মামলার সুবিধার জন্য আমরা বালেশ্বরে যেতে বলেছি।” রেল হাসপাতালে জখমের চিকিৎসার পর এ দিন আরপিএফের অপরাধদমন শাখার দলটি জখমদের নিয়ে ইস্টকোস্ট এক্সপ্রেসে বালেশ্বরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। অপরাধদমন শাখার ইন্সপেক্টর সুরেশ কুমার বলেন, “বচসা থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। সব ট্রেনে তো আরপিএফ থাকে না। তবে যখনই আমরা জানতে পেরেছি ব্যবস্থা নিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন