রেলের দুই শাখায় দুই নিয়ম, অসহায় জরুরি পরিষেবায় যুক্তরা
local train

Local Train: ট্রেনে উঠতে মানা, বাড়ছে ক্ষোভ

করোনা কালে জরুরি পরিষেবার জন্য যুক্ত ব্যক্তিদের ব্যস্ততা বেড়েছে বহু গুণ। কিন্তু সমস্যা হল, নেই পর্যাপ্ত যানবাহন। দিনে মাত্র দুই জোড়া লোকাল ট্রেন চলে দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর-হাওড়া শাখায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২১ ০৬:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

রেলের দুই শাখায় দুই নিয়ম। পূর্ব রেলের ‘স্টাফ স্পেশালে’ রেলকর্মীরা ছাড়াও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের যাতায়াতের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ পূর্ব রেলে ‘স্টাফ স্পেশাল’ শুধুমাত্র রেলকর্মীদের জন্যই। স্বাস্থ্য, ব্যাঙ্কের মতো গুটিকয়েক ক্ষেত্রে বাদ দিলে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশেরাই উঠতে পারছেন না স্টাফ স্পেশালে। ফলে করোনা কালে ক্ষোভ বাড়ছে খড়্গপুর-হাওড়া শাখায়।

Advertisement

করোনা কালে জরুরি পরিষেবার জন্য যুক্ত ব্যক্তিদের ব্যস্ততা বেড়েছে বহু গুণ। কিন্তু সমস্যা হল, নেই পর্যাপ্ত যানবাহন। দিনে মাত্র দুই জোড়া লোকাল ট্রেন চলে দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর-হাওড়া শাখায়। কিন্তু রেলকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, ব্যাঙ্ককর্মী ছাড়া সেখানে ওঠার অনুমতি নেই কারও। ফলে নিত্যযাত্রীদের ভরসা পুরুলিয়া এক্সপ্রেস। অবশ্য তাতে রয়েছে আসন সংরক্ষণের ঝক্কি। খড়্গপুরের মালঞ্চের বাসিন্দা কলকাতা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার উজ্বল সরকার বলেন, “করোনা কালে আমাদের তো কোনও ছুটি নেই। অথচ আমাদের মতো জরুরি পরিষেবার কর্মীদের রেল স্টাফ স্পেশালে উঠতে দিচ্ছে না। পুরুলিয়া এক্সপ্রেসে প্রতিদিন সংরক্ষিত আসন পাওয়া দুষ্কর। তাই অফিসেই অধিকাংশ দিন রাত কাটাতে হচ্ছে।”

খড়্গপুরের ইন্দার বাসিন্দা আলিপুর আবহাওয়া দফতরের কর্মী প্রদীপকুমার ঘোষ বলেন, “পূর্ব রেলে নানা জরুরি বিভাগের কর্মীরা স্টাফ স্পেশালে উঠতে পারছে। কিন্তু খড়্গপুরে আমি সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে গেলেও অনুমতি দেয়নি। রেলকে বারবার আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আবেদন জানালেও রেল উদাসীন। তাই পুরুলিয়া এক্সপ্রেসে অফিসে আসি। ফেরার সম্ভাবনা অধিকাংশ দিনেই থাকে না। দুর্বিসহ অবস্থা।” খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার গজরাজ সিংহ বলেন, “রেল ছাড়াও অন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রের জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের যাতায়াতে আমরাও পরিকল্পনা করছি। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হেড কোয়ার্টারে বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। সেখানে থেকে সবুজ সংকেত পেলেই আমরা অনুমতি দিয়ে দেব। আশা করছি, চলতি সপ্তাহেই অনুমতি দিতে পারব।”

Advertisement

অধিকাংশ জরুরি পরিষেবার লোকেরা উঠতে না পারলেও ভিড় উপচে পড়ছে দু’টি স্টাফ স্পেশালে। খড়্গপুরে চলে জোরদার তল্লাশি। ফলে সেখানে ট্রেন ফাঁকাই থাকে। কিন্তু অভিযোগ, ট্রেন খড়্গপুর ছাড়ার পর অন্য স্টেশনগুলি থেকে অন্য যাত্রীরা উঠে পড়ছেন। সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় ভুগছেন রেলকর্মীরা। ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি উঠতে শুরু করেছে রেলকর্মীদের মধ্যে থেকেই। খড়্গপুরের বাসিন্দা সাঁতরাগাছি রেলওয়ে হাইস্কুলের শিক্ষক প্রশান্তকুমার রায় বলেন, “আমাদের স্কুলে গিয়ে অনলাইন ক্লাস নিতে হচ্ছে। কিন্তু স্টাফ স্পেশালে ইদানীং মেচেদার পর থেকে যে ভিড় হচ্ছে তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা করছি। এ ভাবে চললে আমরা দ্রুত তৃতীয় ঢেউয়ের সম্মুখীন হব। অবিলম্বে ট্রেনের সংখ্যাবৃদ্ধি প্রয়োজন।” রেলের সিনিয়ার ডিভিশনাল কর্মাশিয়াল ম্যানেজার গজরাজ বলেন, “আমরা স্টাফ স্পেশালের সংখ্যা অথবা কোচ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন