খন্দপথ: কৈঁথোড়-রামচন্দ্রপুর কেপি হাইস্কুল থেকে আকলাবাদের রাস্তার এমনই শোচনীয় অবস্থা। —নিজস্ব চিত্র
এগরা-১ নম্বর ব্লকের কৈঁথোড়-রামচন্দ্রপুর কে পি হাইস্কুল থেকে শুরু হয়ে আকলাবাদে শেষ। রাস্তার দৈর্ঘ্য মাত্র আড়াই কিলোমিটার। কিন্তু দুই দশকেও রাস্তার হাল ফেরেনি। আড়াই কিলোমিটার অংশের প্রায় পুরোটাই খানা খন্দে ভরা। বৃষ্টি নামলে যে রাস্তা দিয়ে ছোট গাড়ি তো দূরঅস্ত, হাঁটাচলাই যন্ত্রমার হয়ে ওঠে এলাকার বাসিন্দাদের কাছে। গর্তে জমা জল ও কাদা পেরিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে পড়ে জখম হচ্ছেন অনেকে।
এই এলাকার মধ্যে পড়ছে রামচন্দ্রপুর, কৈঁথোড়, গোকুলপুর, কৈনাড়া, চকবেলা, মহাবিশ্রা গ্রাম। রামচন্দ্রপুরের অজিত সামন্ত, প্রণব সামন্ত, মিঠুন চক্রবর্তী, অনিমেষ চক্রবর্তী বলেন, “দীর্ঘদিন এই বোল্ডার রাস্তা মেরামত বা সংস্কার হয়নি। বিশেষ করে রাতের বেলা রীতিমতো অসুবিধায় পড়তে হয়।’’ কৈঁথোড় গ্রামের তপন শীট, পরেশ পাল, অচিন্ত্য মহারানা এবং গোকুলপুরের প্রফুল্ল কুণ্ডু, কৈনাড়ার রতন দাস ও মহাবিশ্রা গ্রামের খোকন মান্না জানান, অন্য সময় তবু কোনওরকমে যাতায়াত করা য়ায়। কিন্তু বর্ষাকালে রাস্তা বলে চেনাই দুষ্কর। কাদা ও বোল্ডার মিশে একাকার। পথচারীদের জামাকাপড় নষ্ট হয়ে যায়। স্কুলের পড়ুয়ারা আরও বেশি সমস্যায় পড়ে।
রামচন্দ্রপুরের বাসিন্দা শম্ভু চক্রবর্তী বলেন, “বছরের পর বছর ধরে এই সমস্যা চলে আসছে। সমস্যার কথা পঞ্চায়েত, বিডিও, এসডিও এবং জেলা শাসককেও জানানো হয়েছে। কিন্তু এলাকার মানুষের দুর্ভোগ আর শেষ হয়নি। জেলাশাসককে ফোন করলে তিনি জানান, বিষয়টি দেখছেন। কিন্তু পরিস্থিতি আর পাল্টায়নি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার শুরু না হলে তিনি অনশনে বসবেন।’’
তিতিবিরক্ত এলাকাবাসী দলবেঁধে ইতিমধ্যেই এগরা ১-এর বিডিওর কাছে রাস্তা সারানোর দাবিতে দরবার করেছেন। এমনকী পথ অবরোধও করা হয়েছে। কিন্তু হাস ফেরেনি রাস্তার। রামচন্দ্রপুর কে পি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মুক্তিপদ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্কুলের সব শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীদের প্রতিদিন কাদা-জলের রাস্তা পেরিয়ে স্কুলে আসতে হচ্ছে। অনেকে পড়ে গিয়ে জখমও হচ্ছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, একে তো রাস্তার এমন হাল। তার উপর ওভার লোড নিয়ে ছোট লরি, ইঞ্জিন ভ্যান চলাচলের ফলে আরও শোচনীয় হাল হয়েছে।
কী বলছে প্রশাসন?
এগরা-১ এর বিডিও পার্থ মণ্ডল বলেন, “রাস্তার অনেকটা অংশ এগরা ২ নম্বর ব্লকে পড়ছে। ওটা জেলা পরিষদের রাস্তা। গত বছর চার লক্ষ টাকা খরচ করে এগরা কসবা গ্রাম পঞ্চায়েত মেরামতির কাজ করেছে। বিষয়টি বিধায়ককে জানিয়েছি। জেলা পরিষদে ব্লক থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে যাতে রাস্তাটি পিডব্লিউডিকে হস্তান্তর করা হয়।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলার অনেক রাস্তাই বর্ষার জন্য খারাপ হয়েছে। বর্ষার পরেই ওই সব রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’