নয়া নির্দেশে রেশন-জট

ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে রেশন ও কেরোসিন ডিলার সংগঠন। সোমবার খড়্গপুরের ধানসিংহ ময়দানে এক কমিউনিটি হলে বৈঠকের ডাক দিয়েছিল রেশন ডিলার সংগঠন ও কেরোসিন ডিলার সংগঠন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৭ ০৬:১০
Share:

আবেদন করেও ডিজিট্যাল রেশন কার্ড পাননি অধিকাংশ গ্রাহক। এতদিন তাতে অবশ্য রেশন সামগ্রী ও কেরোসিন পেতে সমস্যা হয়নি। তবে এ বার রাজ্য থেকে আসা নয়া নির্দেশিকায় তৈরি হয়েছে আশঙ্কা।

Advertisement

খাদ্য সরবরাহ দফতর থেকে ডিলারদের কাছে আসা রাজ্যের নয়া নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ডিজিট্যাল রেশন কার্ডের গ্রাহকদের প্রতিমাসে ৬০০ মিলিলিটার কেরোসিন দেওয়া হবে। আর যাঁদের পুরনো রেশন কার্ড রয়েছে, তাঁদের মাসে ১৫০মিলিলিটার কেরোসিন দেওয়া হবে। যাঁদের ডিজিট্যাল কার্ড নেই, তাঁরা আবেদনপত্রের নথি ও পুরনো কার্ড দেখিয়ে রেশন সামগ্রী পাবেন কিনা, প্রশ্ন রয়েছে সেখানেও। হিসেব বলছে, প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ জনসংখ্যার খড়্গপুর শহরে এখনও পর্যন্ত প্রায় আড়াই লক্ষ গ্রাহকের হাতে পৌঁছয়নি ডিজিট্যাল রেশন কার্ড। এমন পরিস্থিতিতে এই নির্দেশিকা কার্যকর হলে বহু গ্রাহক বঞ্চিত হবেন। গ্রাহকদের ক্ষোভের জেরে অশান্তি বাধবে বলেও আশঙ্কা ডিলারদের।

ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে রেশন ও কেরোসিন ডিলার সংগঠন। সোমবার খড়্গপুরের ধানসিংহ ময়দানে এক কমিউনিটি হলে বৈঠকের ডাক দিয়েছিল রেশন ডিলার সংগঠন ও কেরোসিন ডিলার সংগঠন। তাঁদের মতে, এত দিন সব গ্রাহক মাসে ৬৪০ মিলিলিটার কেরোসিন পেতেন। নতুন নির্দেশিকায় ডিজিট্যাল রেশন কার্ড না থাকলে ১৫০ মিলিলিটার কেরোসিন পেলে ক্ষোভ বাড়বে। কম কেরোসিনের কমিশনে লোকসান গুনতে হবে ডিলারদের। আবার রেশন সামগ্রীর ক্ষেত্রে যে সব গ্রাহক ইতিমধ্যে ডিজিট্যাল কার্ডের জন্য ফর্ম পূরণ করেছেন, তাঁদের তালিকা ডিলারদের কাছে না থাকায় কত পরিমাণ সামগ্রী পাওয়া যাবে তা নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে। কেরোসিন ডিলার সংগঠনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শহরের অর্ধেকেরও কম মানুষের হাতে ডিজিট্যাল কার্ড রয়েছে। ফলে, কম কেরোসিন বিক্রি করে যে আয় হবে তাতে সাড়ে পাঁচ দিন দোকান খুলে কর্মীর বেতন, বিদ্যুৎতের বিল মিটিয়ে দোকান চালানো মুশকিল হবে।” একই সুরে রেশন ডিলার সংগঠনের শহর সম্পাদক শিশির রায়ের বক্তব্য, “নির্দেশিকা কার্যকর করলে আমরা লাগাতার ধর্মঘটে যাব।”

Advertisement

খাদ্য সরবরাহ দফতরের খড়্গপুর মহকুমা নিয়ামক মিঠুন দাস বলেন, “এই দু’টি নির্দেশিকাই রাজ্য থেকে এসেছে। সেটাই আমরা ডিলারদের জানিয়েছি। এর পরে কোথাও সমস্যা হলে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। তবে রেশনের ক্ষেত্রে যাঁরা কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরা সেই নথি ও পুরনো কার্ড নিয়ে ডিলারের কাছে গেলেই সামগ্রী পাবেন।”

কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ যেখানে ডিজিট্যাল রেশন কার্ড পাননি, সেখানে কেন এই নির্দেশিকা? খাদ্য সরবরাহ দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নিয়ামক সুকমল পণ্ডিতের জবাব, “যাঁরা আবেদন করেছেন তাঁদের কার্ড ধীরে ধীরে তৈরি হয়ে আসছে। আর এটা রাজ্যের নির্দেশিকা। আমাদের কাজ তা কার্যকর করা।’’ ডিলারদের বক্তব্য তাঁরা দফতরে জানাতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন সুকমলবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন