প্রচারে-ম-ম: মোদী আর মমতার ছবিতে ছয়লাপ মেদিনীপুরের পথঘাট। নিজস্ব চিত্র
রবিবার রাত ন’টা। কলেজ মাঠের অদূরে একটি ক্লাবের টিভিতে বিশ্বকাপের ফাইনাল চলছে। সেই খেলা দেখতে যত না ভিড়, তার থেকে কয়েকগুণ ভিড় তখন মাঠের আশেপাশে। লোকজন উঁকিঝুঁকি মারছে। যদি একবার মূলমঞ্চটা ভাল করে দেখা যায়! আজ, সোমবার এই মঞ্চেই বক্তৃতা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কলেজ-কলেজিয়েট স্কুল মাঠে ঢোকার চারটি গেট রয়েছে। দিন কয়েক ধরেই গেটগুলোর সামনে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। তাও ফাঁক গলে মাঠে ঢোকার চেষ্টা করেছেন উৎসাহীরা। একবার দেখতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর সভামঞ্চ!
পিঠোপিঠি দুই মেগা ইভেন্ট। রবিবার বিশ্বকাপের ফাইনাল, আর সোমবার প্রধানমন্ত্রীর জনসভা। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার মতো দলগুলি ছিটকে যাওয়ার পরে এমনিতেই বিশ্বকাপ নিয়ে উন্মাদনা থিতিয়ে এসেছে। আর মেদিনীপুর তো মেতে রয়েছে মোদীর সভা নিয়ে। বিশ্বকাপ ফাইনালের রাতে মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে এক যুবক সাফ বললেন, “বিশ্বকাপ ফুটবল তো চার বছর পরে আবার হবে। কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রী আবার কবে আমাদের শহরে আসবেন ঠিক নেই। তাই আগে একবার মঞ্চ দেখতে এসেছি, মোদীকেও দেখতে আসবো।’’
সব মিলিয়ে মোদীর সফর ঘিরে মেদিনীপুরে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে বিশ্বকাপ ফাইনাল। এমনিতে বড় ম্যাচ থাকলেই বড়পর্দায় খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করে বিভিন্ন ক্লাব। রবিবার রাতে ফ্রান্স- ক্রোয়েশিয়ার ফাইনাল খেলা দেখানোর তেমন আয়োজন প্রায় চোখে পড়েনি। বদলে মোদীর সভা দেখানোর জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানোর তোড়তোড় চলেছে। অথচ, বিশ্বকাপের শুরুর সময়ে শহরের ছবিটা অন্য রকমই ছিল। বিভিন্ন পাড়ায় আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের পতাকা টাঙানো হয়েছিল। ক্লাবে ক্লাবে টিভির সামনে উপচে পড়ছিল ভিড়। মাঝরাত পর্যন্ত জেগে চলছিল খেলা দেখা। সপ্তাহ খানেক আগে মোদীর সভার নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়। ততদিনে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের মতো দলগুলোও বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে। এরপরই যেন বিশ্বকাপ ফুটবলের রং ফিকে হতে শুরু করে মেদিনীপুরে। শহরের এক ক্লাবের সদস্য সৌমেন দত্ত মানছেন, “এ বারের বিশ্বকাপ ফাইনালটা ঠিক জমল না। শহরে কোনও উন্মাদনা নেই।”
মোদীর সভা তো মেদিনীপুরে বিশ্বকাপের ফাইনালকেও ব্যাকফুটে ঠেলে দিল? বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় নিজেও ফুটবলপ্রেমী। রাত জেগে অনেক খেলা দেখেছেন। তিনি বলছিলেন, “এটা স্বাভাবিক। মেদিনীপুর এখন মোদীময়! ’’