ব্রিগেডের জন্য কমেছে বাস। অগত্যা মোটর ভ্যানেই গন্তব্যের পথে। বৃহস্পতিবার পাঁশকুড়া। ছবি: কৌশিক সাঁতরা।
কোথাও চালকদের তৈরি থাকতে বলা হয়েছে ভোর পাঁচটার সময়। কোথাও আগেরদিন রাত ১২টায়। আগামি ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডে তৃণমূলের সমাবেশে যোগ দিতে দলীয় সমর্থকদের নিয়ে যেতে এমনই সময় দেওয়া হয়েছে বাসচালক ও কর্মীদের।
শনিবার ব্রিগেডমুখী হবে জেলার অধিকাংশ বেসরকারি বাস। তার আগে পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকাংশ রুটে চলা বাস ‘বুক’ করে নিয়েছেন শাসক দলের স্থানীয় নেতারা। ফলে শনিবার ভোর থেকেই জেলার বিভিন্ন সড়কে যে বাসের দেখা পাওয়াই মুশকিল হবে সেই আশঙ্কায় এখন থেকেই চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন মানুষজন। ওইদিন রাজ্য সরকারি অফিসগুলিতে ছুটি থাকলেও স্কুল-কলেজ সহ বিভিন্ন বেসরকারি অফিস খোলা থাকছে। ফলে গন্তব্যে পৌঁছতে বিপাকে পড়ার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে।
আশঙ্কার কথা মেনে নিয়েছেন জেলার বাসমালিক সংগঠনের নেতারাও। সংগঠনের হিসেব অনুযায়ী, জেলার সমস্ত রুট মিলিয়ে প্রায় ১২০০ বাস চলাচল করে। ব্রিগেডের সমাবেশে যাওয়ার জন্য শনিবার সারাদিনের জন্য অধিকাংশ বাস আগাম ‘বুকিং’ করেছে জেলার বিভিন্ন এলাকার তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব। ফলে সেদিন বাস চলাচল এক ধাক্কায় অনেকটাই কমবে বলে মানছেন পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তথা তৃণমূল নেতা সুকুমার বেরা। তিনি বলেন, ‘‘ব্রিগেডে যাওয়ার জন্য জেলার সব রুট থেকেই বাস আগাম ‘বুকিং’ করা হয়েছে। অন্য দিনের চেয়ে রুটগুলিয়ে বাসের সংখ্যা অনেক কমে যাবে। তবে হলদিয়া-মেচেদা, নন্দীগ্রাম-মেচেদা, দিঘা-মেচেদা ও পাঁশকুড়া-ঘাটালেরর ব্যস্ত রুটগুলিতে কম সংখ্যা। হলেও বাস চালানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। যাত্রীদের কিছুটা অসুবিধা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।’’
কাজের সূত্রে প্রতিদিন খড়্গপুরে যেতে হয় নারায়ণ দাসকে। তমলুক থেকে বাসে মেচেদা স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরেন তিনি। নারায়ণবাবু বলেন, ‘‘শনিবার সমাবেশের জন্য অধিকাংশ বাস চলবে না বলে চালকরা জানিয়ে দিয়েছে। ওইদিন কী ভাবে কাজে যাব, চিন্তায় রয়েছি।’’
জেলা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক মহম্মদ সামসের আরেফিন বলেন, ‘‘ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত আমাদের সংগঠনের তরফে যে হিসেব এসেছে তাতে ৬৮০টি বাস আগাম ‘বুকিং’ হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রুটে চলা বেশ কিছু বাস নেওয়া হয়েছে। ফলে শনিবার জেলার বিভিন্ন রুটে বাস কমবে। তবে যাত্রীদের জন্য সব রুটে কিছু সংখ্যক বাস চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ জেলা পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারি বাস বেশি সংখ্যায় চালানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’