Solar Eclipse

কেউ খেয়ে, কেউ না খেয়েই দেখলেন সূর্যগ্রহণ

রবিবার সকাল ১০ টা  ৪৬ মিনিট থেকে শুরু হয় গ্রহণ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২০ ০৫:৫০
Share:

তমলুকে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

গত কয়েকদিন ধরেই সূর্যের বলয়গ্রাস নিয়ে উৎসাহ কম ছিল না। মহাজাগতিক এই ঘটনা কখন কোথায় কী ভাবে দেখা যাবে তা নিয়ে চর্চার শেষ ছিল না। বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে এর প্রচারও করা হয়েছিল। তবুও সূর্যগ্রহণ চলাকালীন কোনও খাদ্য গ্রহণ করা যাবে না, এই কুসংস্কার থেকে বেরোতে পারলেন না জেলার একটা বড় অংশের মানুষ। রবিবার সূর্যগ্রহণ শুরুর আগেই তাই অনেকে সেরে ফেললেন মধ্যাহ্ন ভোজন। এমনকী গ্রহণ চলাকালীন জলও স্পর্শ করলেন না অনেকে। এই ধরনের কুসংস্কার বন্ধ করতে তাই আরও প্রচারের প্রয়োজন আছে বলে মানছেন বিজ্ঞান সংস্থার সদস্যরা।

Advertisement

রবিবার সকাল ১০ টা ৪৬ মিনিট থেকে শুরু হয় গ্রহণ। ‘ব্রেক থ্রু সায়েন্স সোসাইটি’র তরফে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে সূর্যগ্রহণের বিজ্ঞানসম্মত কারণ নিয়ে আগে থেকেই সমাজ মাধ্যমে চালানো হয় প্রচার। পাঁশকুড়া, তমলুক, নিমতৌড়ি, কাঁথি ও হলদিয়ায় শিবির করে গ্রহণ দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছেল এই সংস্থার উদ্যোগে। সেই সঙ্গে গ্রহণ চলাকালীন খাওয়া যাবে না এই ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে শিবিরগুলিতে বিজ্ঞান সংস্থার তরফে গ্রহণ দেখতে আসা মানুষজনকে দেওয়া হয় খাবার। খাবার খেতে খেতেই চলে গ্রহণ দেখা। শিবিরগুলিতে কোথাও টেলিস্কোপ, কোথাও আবার ‘সান ফিল্টার’ দিয়ে গ্রহণ দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।

এ দিন সূর্যগ্রহণ দেখার জন্য হলদিয়ায় শিবির করে দুটি বিজ্ঞান সংগঠন। মেরিন ড্রাইভে শিবির করে দেখানো হয় এই মহাজাগতিক এই দৃশ্য। আশিস লাহিড়ী, শুচিস্মিতা মিশ্র, রায়পদ কর, বৈদ্যনাথ ঘোষ, অঞ্জন কুণ্ডুর মতো বিজ্ঞান কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন শিবিরে। হাজির ছিল খুদেরাও। গ্রহণ দেখতে আসা মানুষজনকে খাবারের পাশাপাশি মাস্ক, স্যানিটাইজার দেওয়া হয়।

Advertisement

যদিও জেলার একটা বড় অংশের মানুষ গ্রহণ চলাকালীন না খেয়ে থাকলেন। কেউ কেউ আবার গ্রহণ শুরুর আগেই সেরে ফেলেন মধ্যাহ্ন ভোজন। পাঁশকুড়ার পূর্ব বাকুলদা গ্রামের বাসিন্দা সোমা মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রহণের সময় না খেয়ে থাকতে হয় এই প্রথা পরিবারে বহু বছর ধরে চলে আসছে। তাই এদিনও গ্রহণ শুরুর আগেই সবাই দুপুরের খাবার খেয়ে নিয়েছিলাম। গ্রহণ চলাকালীন কিছু খাইনি।’’ তবে সচেতনতার ছবিও রয়েছে। কোলাঘাটের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক কার্তিক সাহু বলেন, ‘‘গ্রহণ চলাকালীন খেতে নেই এই ধারণা ঠিক নয়। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন গ্রহণ চলাকালীন খেলে কোনও ক্ষতি হয় না। তাই এমন কুসংস্কার মানি না।’’

‘ব্রেক থ্রু সায়েন্স সোসাইটি’র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুমন্ত শী বলেন, ‘‘করোনা আবহে এ বার আমরা কোনও এলাকায় গিয়ে প্রচার করতে পারিনি। তবে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই সমাজ মাধ্যমে প্রচার চালানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও অনেকেই গ্রহণ চলাকালীন কিছু না খেয়েই ছিলেন বলে আমরা শুনেছি। আসলে গ্রহণ নিয়ে মানুষের মধ্যে যে কুসংস্কার বদ্ধমূল রয়েছে তা দূর করতে আরও বেশি প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন