সিদ্ধিদাতার কাছেও ডেঙ্গি বিনাশের প্রার্থনা

নানা ভাষাভাষি মানুষের শহরে ‘গণপতি বাপ্পা’র পুজোর জাঁক বরাবর বেশি। বিশালাকার মূর্তি থেকে রকমারি থিম, এ বারও কিছুই বাদ নেই। সেই সঙ্গে জুড়েছে সিদ্ধিদাতার কাছে ডেঙ্গি থেকে মুক্তির প্রার্থনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৭
Share:

অতিকায়: ৬৮ ফুটের মূর্তি নিউ সেটলমেন্টে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

দুর্গাপুজোর মণ্ডপে ডেঙ্গি সচেতনতার বার্তা থাকলে পুরস্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছে খড়্গপুর পুরসভা। তার আগেই গণেশ পুজোর মণ্ডপে উঠে এল ডেঙ্গি রোখার কথা।

Advertisement

নানা ভাষাভাষি মানুষের শহরে ‘গণপতি বাপ্পা’র পুজোর জাঁক বরাবর বেশি। বিশালাকার মূর্তি থেকে রকমারি থিম, এ বারও কিছুই বাদ নেই। সেই সঙ্গে জুড়েছে সিদ্ধিদাতার কাছে ডেঙ্গি থেকে মুক্তির প্রার্থনা।

শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ সেটলমেন্টের ‘বালা সেবা সঙ্গমে’র তৃতীয় বর্ষের গণেশ আরাধনা এ বার সব থেকে বেশি সাড়া ফেলেছে। ২০১৫ সালে এই পুজো শুরু করেছিল রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডু। শ্রীনুর মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী, স্থানীয় কাউন্সিলর পূজা নায়ডু এই পুজোর আয়োজন করেছেন। প্রতিবার মূর্তির উচ্চতার সঙ্গে সমান ওজনের লাড্ডু প্রসাদ হিসাবে নিবেদন করা হয় এখানকার পুজোয়। ২০১৫ সালে ৫৬ ফুট উচ্চতার গণেশ মূর্তির সঙ্গে প্রসাদে ছিল ৫৬ কিলোগ্রামের লাড্ডু। ২০১৬ সালে ৬১ ফুট উঁচু গণেশকে নিবেদন করা হয়েছিল ৬১ কিলোগ্রামের লাড্ডু। এই পুজোর জাঁক এ বার বিগত বছরগুলিতে ছাপিয়ে গিয়েছে। মূর্তির উচ্চতা করা হয়েছে ৬৮ ফুট। আর লাড্ডুর ওজন ৬৮ কিলোগ্রাম। পুজোর বাজেট ১২ লক্ষ টাকা। ন’দিনের পুজোর সঙ্গে চলবে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আর সেই অনুষ্ঠানের ফাঁকেই চলবে ডেঙ্গি সচেতনতার প্রচার। পুজোর উদ্বোধন করেছেন জেলা পরিষদ সদস্য অজিত মাইতি, পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। পুজোর আয়োজক পূজা বলছিলেন, “শ্রীনুর অভাব প্রতি পদক্ষেপে টের পাচ্ছি। কিন্তু ওঁর হাতে শুরু হওয়া পুজোর জাঁক কমতে দিইনি। গণেশজির কাছে ডেঙ্গি-মুক্তির প্রার্থনাও করছি। স্বাস্থ্য কর্তাদের উপস্থিতিতে সচেতনতা প্রচার হচ্ছে।”

Advertisement

মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে গণেশ পুজোর রেওয়াজ সবচেয়ে বেশি। ‘মিনি ইন্ডিয়া’ খড়্গপুরেও সমৃদ্ধির কামনায় বেশ কয়েক বছর ধরেই শুরু হয়েওছে গণেশ পুজোর চল। পুজোর আচারেও দক্ষিণ ভারতীয় রীতি থেকে মহারাষ্ট্রের রীতি, সবই মানা হয়। আবার অনেক পুজো কমিটি দু’টি রীতি মিলিয়েই পুজোর আয়োজন করে। যেমন, ১৯৮৫ সাল থেকে হয়ে আসা গোলবাজার ২ টাইপ রেল কলোনির ‘গোল্ডেন বয়েজ ক্লাবে’র পুজোয় দুই রীতির মিশেল দেখা যায় প্রতিবছর। এ বারও পুজোর আচারে থাকে দক্ষিণী রীতির প্রাধান্য। আর ১৩ ফুটের গণেশ মূর্তির মাথায় মহারাষ্ট্রের পাগড়ি। পাঁচ দিন ধরে চলবে পুজো। কোষাধ্যক্ষ পি রবিও বলেন, “আমরা ডেঙ্গি মুক্তির জন্য গণেশের কাছে প্রার্থনা করছি।’’

গোলবাজার লোকোশেড কালীমন্দিরের ময়দানে এ বার বড় করে পুজো করছে ‘ক্রেজি বয়েজ’। পাঁচবছরের এই পুজোয় জাঁক সবথেকে বেশি। গণেশের মূর্তি হয়েছে বালাজির আদলে। খোলা আকাশের নীচেই চলছে গণেশবন্দনা। কর্মকর্তা ভেঙ্কট সিদ্ধার্থ বলেন, “আমাদের মূর্তি জলরোধী। বৃষ্টিতেও কিছু হবেনা। কিন্তু এই বর্ষার মরসুমে শহরে অনেক মানুষ ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই দেবতার কাছে আমরা শহরের মানুষকে রোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য প্রার্থনা করছি।” খরিদা সরগম বয়েজ ক্লাবের পুজোর এ বার ১৫তম বর্ষ। ৫০ হাজার টাকা বাজেটের পুজোয় মূর্তিতে শিবের আদল। কর্মকর্তা আদিত বর্মা বলেন, “আমাদের বাজেট কম। প্রতিবছর জলরোধী মূর্তি করলেও এ বার সম্ভব হয়নি। তবে ডেঙ্গি মুক্তির জন্য সিদ্ধিদাতার কাছে প্রার্থনা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন