স্থায়ী বাঁধ তৈরি হচ্ছে শিলাবতীর

সেচ দফতর সূত্রে খবর, গত বছর ২৬ জুলাই রাতে প্রতাপপুরে জলের চাপে ভেঙে গিয়েছিল শিলাবতী নদীর বাঁধ। নতুন করে প্লাবিত হয়েছিল ঘাটাল ও দাসপুরের শতাধিক গ্রাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৫
Share:

পুরনো অস্থায়ী বাঁধ। নিজস্ব চিত্র

বন্যার সময় জলের তোড় আটকাতে অস্থায়ী ভাবে বাঁধের মেরামতি। ঘাটালের প্রতাপপুরে শিলাবতী নদীর বাঁধ ভাঙার পর কেটে গিয়েছে সাতটা মাস। শেষ পর্যন্ত শিলাবতী নদীর স্থায়ী বাঁধ তৈরিতে উদ্যোগী হল সেচ দফতর। মহকুমা সেচ আধিকারিক উত্তম হাজরা বলেন, ‘‘ওয়ার্ক অর্ডারের কাজ শেষ। নতুন বাঁধ তৈরির জন্য এলাকার তিন-চারটি দোকান ও বাড়ি ভেঙে সরিয়ে দেওয়া হবে। তারই প্রস্তুতি চলছে। এপ্রিল মাসেই শেষ হবে কাজ।”

Advertisement

সেচ দফতর সূত্রে খবর, গত বছর ২৬ জুলাই রাতে প্রতাপপুরে জলের চাপে ভেঙে গিয়েছিল শিলাবতী নদীর বাঁধ। নতুন করে প্লাবিত হয়েছিল ঘাটাল ও দাসপুরের শতাধিক গ্রাম। জলের তলায় চলে গিয়েছিল গোটা ঘাটাল শহর। স্কুল, সরকারি দফতর, ব্যাঙ্ক, এটিএম থেকে বিদ্যুতের সাবস্টেশন বাদ যায়নি কিছুই। জল ঢুকেছিল হাসপাতালেও। বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেই সময় সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক বার ঘাটালে এসেছিলেন। বন্যা কবলিত ঘাটাল পরিদর্শন করে সেচমন্ত্রী ভবিষ্যতে ফের এমন পরিস্থিতি আটকাতে ঘাটালের বিভিন্ন নদীর বাঁধ ভাল ভাবে সংস্কারের প্রতিশ্রতি দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে প্রতাপপুরে ভেঙে যাওয়া বাঁধটিও নতুন করে তৈরি হবে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় বর্ষা চলায় এবং বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে ফের জল ঢুকে যাতে ক্ষতির বহর না বাড়ে সেজন্য সাময়িক ভাবে বাঁধ সংস্কার করা হয়েছিল।

সেচ দফতর জানিয়েছে, শিলাবতী নদীর ওই বাঁধ প্রায় ১৫০ মিটার পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সব মিলিয়ে ১৬০ মিটার বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করা হয়েছিল। শাল কাঠ সঙ্গে নাইলনের নেটের উপর মাটির বস্তা ফেলে অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করা হয়। এমনকী বাঁধের উপর দিয়ে বাইক-সহ সমস্ত যান চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ বার পাকাপোক্ত ভাবে স্থায়ী বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হল। নতুন বাঁধটি হবে লম্বায় ১৭০ মিটার এবং ৫০ মিটার উঁচু ও চওড়ায় সাড়ে পাঁচ মিটার। তবে নতুন এই বাঁধটি আলাদা ভাবে তৈরি হচ্ছে। পরে তা পুরানো বাঁধের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে। প্রথমে মাটি দিয়ে পুরো বাঁধ তৈরি হবে। তারপর বোল্ডার ফেলে শক্ত করা হবে। বোল্ডারের উপর মোরাম ফেলে তৈরি হবে রাস্তা।

Advertisement

সেচ দফতর জানিয়েছে, বর্ষায় যাতে ফের এই বাঁধের উপর জলের চাপ না পড়ে তার জন্য অস্থায়ী বাঁধটিও থাকবে। নতুন বাঁধের সঙ্গে অস্থায়ী বালির বস্তা দিয়ে তৈরি বাঁধটিকে জুড়ে দেওয়া হবে। স্বাভাবিক ভাবেই তখন বাঁধটি প্রায় দশ মিটার চওড়া হয়ে যাবে। এখন ঘাটালের শিলাবতী, কংসাবতী ও রূপনারায়ণ–সহ বিভিন্ন নদী বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। প্রতাপপুরে স্থায়ী বাঁধের জন্য দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

যদিও বন্যায় ভুক্তভোগী ঘাটালের মানুষের দাবি, নতুন বাঁধ তৈরির পাশাপাশি পুরনো বাঁধের মেরামতি হচ্ছে ভাল কথা। তবে বাঁধ যাতে যথেষ্ট জলের চাপ সহ্য করতে পারে সে দিকে ভাল করা নজর দেওয়া জরুরি। না হলে ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন