পুরস্কৃত নিপীড়িতের কবি সারিধরম

চরম দারিদ্রের মধ্যে কেটেছে শৈশব আর কৈশোর। দেখেছেন দিনমজুর বাবা ও মায়ের কঠোর জীবন সংগ্রাম। তবুও ক্ষুধার রাজ্যে তাঁর নিজের পৃথিবী ছিল ‘পদ্যময়’। ছোট ছোট শব্দবন্দ ও ছন্দক্রমে মনে মনেই কবিতা রচনা করতেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০০:২২
Share:

সম্মান: অনবদ্য অবদানের জন্য পুরস্কৃত কবি সারিধরম। নিজস্ব চিত্র

চরম দারিদ্রের মধ্যে কেটেছে শৈশব আর কৈশোর। দেখেছেন দিনমজুর বাবা ও মায়ের কঠোর জীবন সংগ্রাম।

Advertisement

তবুও ক্ষুধার রাজ্যে তাঁর নিজের পৃথিবী ছিল ‘পদ্যময়’। ছোট ছোট শব্দবন্দ ও ছন্দক্রমে মনে মনেই কবিতা রচনা করতেন তিনি।

সালটা ১৯৭১। তখন তিনি স্কুল পড়ুয়া। ‘মুজিবর’ শিরোনামে তাঁর লেখা একটি কবিতা প্রথম প্রকাশিত হয় সরকারি পত্রিকা ‘পছিম বাংলা’য়। তার পর টানা সাড়ে চার দশক ধরে সাঁওতালি সাহিত্যের উজ্জ্বল মণি হয়ে উঠেছেন ঝাড়গ্রামের সারিধরম হাঁসদা। প্রকৃত নাম বাসুদেব হাঁসদা। কিন্তু পাঠকদের কাছে তিনি পরিচিত ‘সারিধরম’ ছদ্মনামেই।

Advertisement

সাঁওতালি সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য আগামী ১১ মার্চ পশ্চিমবঙ্গ সান্তালি আকাদেমি-র ‘কবি সারদাপ্রসাদ কিস্কু স্মৃতি পুরস্কার’ পাচ্ছেন ৬২ বছরের সারিধরমবাবু। ওই দিন ঝাড়গ্রাম শহরের দেবেন্দ্রমোহন হলে রাজ্য সরকারের আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগের অধীন পশ্চিমবঙ্গ সান্তালি আকাদেমির একটি অনুষ্ঠানে সারিধরমবাবুর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। এর আগে ২০১৩ সালে সাঁওতালিতে ‘ডোমবে বাহা’ কাব্যগ্রন্থটির জন্য সাহিত্য আকাদেমি (দিল্লি)-এর ‘শিশু সাহিত্য পুরস্কার’ পান সারিধরমবাবু। রাজ্যের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সাঁওতালি সিলেবাসে (দ্বিতীয় শ্রেণি, তৃতীয় শ্রেণি, চতুর্থ শ্রেণি, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি) সারিধরমবাবুর একাধিক কবিতা পড়ানো হয়।

সারিধরমবাবু বলেন, “ছোটবেলায় দেখতাম, অমানুষিক কায়িক শ্রম করার পর সন্ধ্যায় বাবা খোলা গলায় গান করতেন। অসম্ভব মন কেমন করা সেই সুরই আমাকে ছন্দের প্রতি আগ্রহী করে তোলে। এ ছাড়া পরবর্তীকালে প্রসিদ্ধ সাঁওতালি মহাকবি সাধু রামচাঁদ মুর্মুর লেখা পড়েও অনুপ্রাণিত হয়েছি। ছোটবেলা থেকেই ছন্দ মিলিয়ে কথার পিঠে কথা বসাতাম। নিপীড়িত মানুষজনকে নিয়েও কবিতা লিখেছি।” প্রথম জীবনে বাংলা হরফে লিখলেও গত চোদ্দ বছর ধরে অলচিকি লিপিতেই সাহিত্য সৃষ্টি করে চলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন