cow

‘পলাতক’ গরু খুঁজতে হন্যে পুলিশ

গরু পাচার কাণ্ডে মাসখানেক আগে গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমে তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এর পরে গত কয়েক মাসে রাজ্যের সীমানা এলাকায় পাচার রুখতে তৎপরতা দেখা দিয়েছে পুলিশের মধ্যে।

Advertisement

গোপাল পাত্র

এগরা শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২২ ০৮:১৩
Share:

এগরা থানায় গরুর দল। নিজস্ব চিত্র

চোর ধরতে পুলিশের ‘গরু খোঁজা’ তল্লাশির কথা আমরা জানি। এগরা থানার পুলিশ অবশ্য গরু খুঁজতেই ‘গরু খোঁজা’ তল্লাশি চালাচ্ছে!

Advertisement

গরু পাচার কাণ্ডে মাসখানেক আগে গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমে তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এর পরে গত কয়েক মাসে রাজ্যের সীমানা এলাকায় পাচার রুখতে তৎপরতা দেখা দিয়েছে পুলিশের মধ্যে। কিন্তু পাচার রুখে দেওয়ার পরে উদ্ধার হওয়া ওই গরুর ঠাঁই হবে কোথায়, তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে এগরা থানার। আপাতত থানার একটি অংশই কার্যত খাটালে পরিণত হয়েছে। কখনও আবার সেই ‘খাটাল’ থেকে ‘পলাতক’ গরুর খোঁজে যেতে হচ্ছে পুলিশ কর্মীদের।

গত কয়েক সপ্তাহে ওড়িশা-আলংগিরি সীমানা দিয়ে একাধিকবার গরু পাচারের চেষ্টা করা হয়েছে। যা পুলিশ রুখেও দিয়েছে। গত ২৩ নভেম্বর এভাবে পাচার রুখে তিনটি গরু পুলিশ উদ্ধার করে। গত রবিবার রাতে ফের আলংগিরি সীমানায় দু’টো ষাঁড়- সহ তিনটি গরু উদ্ধার করা হয়। ষাঁড়-সহ ওই ছ’টি গরুর আপাতত ঠিকানা এগরা থানা চত্বর। থানারই একটি অংশে গরুগুলিকে বেঁধে তাদের খাবার দেওয়া থেকে দেখভাল করছেন সিভিক ভলান্টিয়ার্সরা। ২৪ ঘণ্টা গরু উপর নজরদারির দায়িত্বে থাকছেন এক পুলিশ অফিসারও। কিন্তু অভিযোগ, রাত হলেই গরুগুলির দায়িত্ব নিয়ে কার্যত দায় ঠেলাঠেলি চলে পুলিশকর্মীদের মধ্যে। আর নজরদারির ফাঁকতালে পুলিশের ‘কয়েদ’ থেকে পালিয়ে যাচ্ছে গরুরা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগে বাঁধন আলগা হয়ে রাতে থানা চত্বর থেকে একটি গরু পালিয়ে যায়। সকাল থেকে এগরা শহর জুড়ে পুলিশ কর্মীরা সেই ‘ফেরার’ গরু খোঁজেন। অবশেষে দু’তিন ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির গরুর সন্ধান মিলেছিল সেদিন। দিনের কাজ ছেড়ে এভাবে গরুর দেখভালে জেরবার পুলিশ কর্মীদের একাংশ। থানার এক পুলিশ কর্মী জানাচ্ছেন, আইনশৃঙ্খলা সামাল দেওয়ার সঙ্গে এখন গরুর পরিচর্যার জন্য তাঁদের অতিরিক্ত ডিউটি করতে হচ্ছে। মল-মূত্র পরিষ্কার করতে হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘গরুগুলি থানা থেকেগেলে শান্তি।’’

এভাবে উদ্ধার হওয়া গরুর শেষ পর্যন্ত ভবিতব্য কী? কত দিনই বা তাদের থানায় রাখা হয়?

পুলিশ সূত্রের খবর, গরু উদ্ধারের পরে আদালতে জানাতে হয়। আদালত পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে সরকারি খাটাল বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে গরুগুলিকে দেখভালের জন্য চিহ্নিত করে। সেই মতো খটাল বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গরুগুলিকে নিয়ে যায়। অনেক সময় থানাও সরসরি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই প্রক্রিয়া হতে সাত থেকে ১০ দিনের মতো সময় লাগে। এগরা থানা সূত্রের খবর, সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া গরুগুলিকে নিয়ে গিয়ে দেখভালের জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত সংস্থার তরফে কোনও সাড়া মেলেনি বলে দাবি।

বর্তমানে গরুর দেখভালে এগরা থানার পুলিশ কর্মীদের নাজেহাল অবস্থা প্রসঙ্গে এগরার এসডিপিও মহম্মদ বৈদ্যুজ্জামান বলছেন, ‘‘আইনি প্রক্রিয়া চলাকালীন উদ্ধার হওয়া গরুগুলিকে থানায় রাখতে হয়েছে। তাদের পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অবলা ওই পশুদের সামলাতে একটু সমস্যাতো থাকবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন