দিঘায় উৎসবের আমেজ। — নিজস্ব চিত্র।
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সৈকত শহর। বছরের শেষ দু’দিন পর্যটকদের ভিড় সামলাতে দিঘাকে কার্যত নিরাপত্তার দুর্গে মুড়ে ফেলেছে প্রশাসন। উৎসবের মেজাজে যাতে ‘অতিরিক্ত ঘর ভাড়া’র চোরাকাঁটা বাধা হয়ে না দাঁড়ায় তার জন্য হোটেল ব্যবসায়ীদের কড়া বার্তাও দিয়েছে পুলিশ। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বেশি ভাড়া নিলেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই দিঘার রাজপথে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় হচ্ছে পুলিশ। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে কোনও পর্যটক অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়লে যাতে তৎক্ষণাৎ সাহায্য পান তার জন্য কন্ট্রোল রুম ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকবে। দিঘা ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই পর্যটকদের কাছে পুলিশের হেল্পলাইন নম্বর পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে বলেন, ‘‘পূর্ব ঘোষণা মেনেই বছরের শেষ দু’দিন দিঘার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হবে। দিঘা গেটের কাছ থেকেই এই নজরদারি শুরু হবে মঙ্গলবার সকাল থেকে। বড়দিনের মতো এই দু’দিনও সাতটি নির্দিষ্ট পার্কিং পয়েন্টে পর্যটকদের গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের কাছে পর্যটকদের নিরাপত্তাই অগ্রাধিকার।’’
ভিড় সামলানোর প্রস্তুতির পাশাপাশি বিনোদনেও খামতি রাখছে না দিঘা। পর্যটকদের মনোরঞ্জনে দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত হচ্ছে ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’ ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় ওল্ড দিঘার সমুদ্রতটে এই উৎসবের উদ্বোধন করবেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক। সোম ও মঙ্গলবার দু’দিন জুড়েই থাকছে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। হাজির থাকবেন প্রথিতযশা শিল্পীরাও।
হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্র জানান, বিচ ফেস্টিভ্যাল ছাড়াও বিভিন্ন হোটেলে ব্যক্তিগত স্তরে বর্ষবরণের আয়োজন থাকছে। পর্যটকেরা যাতে উৎসবের আমেজ উপভোগ করতে পারেন সে বিষয়ে তৎপর থাকা হচ্ছে।
বর্ষবরণের রাতটি সপ্তাহের মাঝামাঝি হওয়ায় ভিড় কিছুটা কম হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও বছরের প্রথম শনি ও রবিবার পর্যটকের ঢল নামবে বলেই আশাবাদী ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যেই বড়দিন উপলক্ষে আলোকমালায় সেজে উঠেছে গোটা সৈকত শহর। বিশেষ সজ্জায় সেজেছে দিঘার নতুন জগন্নাথ মন্দিরও। উল্লেখ্য, উদ্বোধনের মাত্র আট মাসের মাথায় গত রবিবারই এই মন্দির এক কোটি দর্শনার্থীর মাইলফলক স্পর্শ করেছে। সব মিলিয়ে বছরের শেষে দিঘা এখন আক্ষরিক অর্থেই অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।