প্রতীকী ছবি।
দলীয় অফিস দখল করার অভিযোগ উঠেছিল দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে। চন্দ্রকোনার কৃষ্ণপুরের তৃণমূলের কোন্দলে পুজোর মধ্যেই অশান্তি বাধে। নতুন করে গোলমাল না হলেও সেই ঘটনার জেরে কৃষ্ণপুর ও সংলগ্ন কল্লা গ্রাম রবিরাবও ছিল থমথমে। দাপিয়ে বেড়িয়েছে বাইক বাহিনী, চলছে হুমকি,মারধর। অভিযোগ, তৃণমূলের একাংশের তাণ্ডবে ঘরছাড়া দলেরই একাধিক নেতা-কর্মী।
চন্দ্রকোনার এই অশান্তি প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “দলবিরোধী কোনও কাজ দল প্রশ্রয় দেবে না। কোনও বেয়াদবি দল বরদাস্ত করবে না। উভয় পক্ষকে ডেকে দলের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” অজিতবাবুর হুঁশিয়ারি, “দলের নির্দেশ অমান্য করলে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থ নেবে। দল সে ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করবে না।”
বস্তুত, শনিবারই তৃণমূলের বিবদমান দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেছে পুলিশ। বৈঠক শেষে পুলিশ দু’পক্ষের নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলার কোনও অবনতি হলে শক্তহাতে তা দমন করা হবে। ইতিমধ্যেই নজিবুর রহমান-সহ একাধিক নেতার প্রতি কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। তবে এ সবের মধ্যেও বন্দুক নিয়ে বাইক মিছিল করার অভিযোগ উঠেছে। জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিকের বক্তব্য, “কৃষ্ণপুরে পুলিশি টহল চলছে। অন্যায় কিছু দেখলেই গ্রেফতার করা হবে।”
তৃণমূলের দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মূলত বালি ও মোরামের বেআইনি কারবারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েই কৃষ্ণপুরে শাসক দলের দু’পক্ষের লড়াই। এক দিকে রয়েছেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রাকেশ সরকারের দলবল, অন্য দিকে স্থানীয় নেতা আশানুল্লা মণ্ডল। রাকেশ দলের চন্দ্রকোনা-২ ব্লক সভাপতি অমিতাভ কুশারীর অনুগামী আর আশানুল্লা স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষের ঘনিষ্ঠ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই দু’পক্ষের গোলমাল চলছিল। আর সাম্প্রতিক অশান্তির সূত্রপাত গত শুক্রবার সন্ধ্যায়। সে দিন দলের অঞ্চল অফিস দখল করে গ্রামছাড়া করা হয় দলেরই একাংশ নেতা-কর্মীদের। এখন এলাকায় সংগঠন বাড়াচ্ছে বিজেপিও। এমন পরিস্থিতিতে দলের দু’পক্ষের কোন্দলে রাশ টানতে উঠেপড়ে লাগেন জেলা নেতৃত্ব। শনিবার জেলা সভাপতি অজিত মাইতি চন্দ্রকোনার ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। এরপরই সন্ধ্যায় পুলিশ দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসে।