দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের পর সাংবাদিক বৈঠক পুলিশের। শুক্রবার। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
নন্দীগ্রাম, হলদিয়া, চণ্ডীপুর, কাঁথির মারিশদার বিভিন্ন বাজার, বসতবাড়ি থেকে মোটর সাইকেল চুরি নিয়ে থানায় অভিযোগ জমা পড়ছিল বিস্তর। জেলা জুড়ে মোটর সাইকেল চুরির সেই তদন্তে নেমে মারিশদা, নন্দীগ্রাম -সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে মোটর সাইকেল চুরি চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ২৭টি মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার সাংবাদিক বৈঠকে জানান, মোটর সাইকেল চুরি চক্রে জড়িত অভিযোগে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জেরা করে ২৭টি মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়েছে। চক্রে জড়িত অন্যদের ধরতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অজয় দাস, শেখ মুস্তাফা, মীর মুস্তাক আলি, শেখ জাকির ও বাপন মান্না। ওড়িশার জগৎসিংহপুরের অজয় দাস খেজুরি থানা এলাকার হেঁড়িয়ায় ভাড়া বাড়িতে থাকত। শেখ মুস্তাফা, শেখ জাকিরের বাড়ি খেজুরির আলি আমজাদচকে। মীর মুস্তাক আলির বাড়ি নন্দীগ্রামের সাতেঙ্গাবাড়ি ও বাপনের বাড়ি হলদিয়ার মাখনবাবুর বাজারে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম, হলদিয়া, চণ্ডীপুর, মারিশদা-সহ জেলার বিভিন্ন বাজার, অফিস এবং বাড়ি থেকে একের পর এক মোটর সাইকেল চুরির অভিযোগ আসছিল। সম্প্রতি মারিশদা থানার পুলিশ এলাকার একটি মোটর সাইকেল চুরির তদন্তে নেমে খেজুরির হেঁড়িয়া থেকে অজয় দাসকে গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করে আলি আমজাদচক থেকে শেখ মুস্তাফা ও শেখ জাকিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে একটি মোটর সাইকেল উদ্ধার হয়। ধৃতদের কাছে আরও কয়েকজন দুষ্কৃতীরা খোঁজ মেলে। এর পর নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে মীর মুস্তাক আলিকে গ্রেফতার করে। বাপন মান্নাকে গ্রেফতার করে হলদিয়া থানার পুলিশ। ধৃতদের কাছে খবর পেয়ে কাঁথির শুনিয়া থেকে ১৫ টি, নন্দীগ্রাম থেকে ৯ টি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে ২টি মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতী দলের মূল পাণ্ডা অজয় দাস এবং শেখ মুস্তাফা। জেলার বিভিন্ন বাজার, অফিস ও বসতবাড়ি থেকে বিশেষ চাবি ব্যবহার করে মোটর সাইকেলের তালা খুলে সেগুলি চুরি করত। তারপর নম্বর প্লেট বদল করে জাকির, মুস্তাক, বাপনদের মাধ্যমে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করত। গত ৩ – ৪ বছর ধরে মোটরসাইকেল চুরি করছিল দুষ্কৃতী দলটি। তবে এই চক্রের সঙ্গে ওড়িশার দুষ্কৃতী দলের যোগ আছে কিনা তদন্ত করছে পুলিশ।