arrest

Arrest: জাতীয় সড়ক থেকে অপহরণ, ধৃত অভিযুক্ত

বুধবার সকালে পুলিশ আটবেড়িয়া থেকে আহত অবস্থায় অপহৃতকে উদ্ধার করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২২ ১০:৩১
Share:

ধৃত সোমনাথ (বাঁদিকে)। নিজস্ব চিত্র।

ভর সন্ধ্যায় প্রকাশ্য রাস্তায় এক ব্যক্তিকে ‘অপহরণ’। তার পরে পুলিশের সিনেমার কায়দায় অভিযুক্তের গাড়িকে ধাওয়া করা। শেষে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই অপহৃত ব্যক্তি উদ্ধার করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতকে জেরা করে উঠে এল ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব!

Advertisement

মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে পাঁশকুড়ার সিদ্ধা বাজার এলাকা এই অপহরণের ঘটনা ঘিরে ছিল জমজমাট। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে এক ব্যক্তিকে কয়েকজন মারধর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে দেখেন তাঁরা। ওই সময় সিদ্ধা বাজার এলাকায় টহলদারিতে ছিলেন পাঁশকুড়া থানার আইসি আশিস মজুমদার। তিনি অভিযুক্তদের গাড়ি ধাওয়া করে বেশ কিছুটা যান। কিন্তু অভিযুক্তেরা সে সময় পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। জাতীয় সড়কের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। বুধবার সকালে পুলিশ আটবেড়িয়া থেকে আহত অবস্থায় অপহৃতকে উদ্ধার করে।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আহত ব্যক্তির নাম পূর্ণচন্দ্র কোলে। বাগনানের কাঁটাপুকুর এলাকার বাসিন্দা বছর পঁয়ত্রিশের ওই যুবক পূর্ণচন্দ্র পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ। পুলিশ সূত্রের খবর, পূর্ণচন্দ্র বিবাহিত হলেও পাঁশকুড়ার আটবেড়িয়ার বাসিন্দা অন্তরা প্রামাণিকের সঙ্গে তাঁর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। অন্তরা স্বামীহারা। এদিকে, আটবেড়িয়ার আরেক বাসিন্দা বছর বাহান্নর সোমনাথ মাইতির সঙ্গেও অন্তরার সম্পর্ক ছিল। বছর দু’য়েক আগে সোমনাথের স্ত্রী-ও মারা গিয়েছেন। তিনি একজন প্রাক্তন সেনা কর্মী। আটবেড়িয়ায় তার একটি দোকান রয়েছে।

Advertisement

অন্তরাকে ঘিরে ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় পূর্ণচন্দ্র এবং সোমনাথের। পূর্ণচন্দ্র পুলিশকে জানিয়েছেন, সোমনাথ প্রায়ই তাঁকে হুমকি দিত অন্তরার জীবন থেকে পূর্ণকে সরে যাওয়ার জন্য। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সোমনাথ পূর্ণচন্দ্রকে সিদ্ধা বাজার এলাকায় ডেকে পাঠায়। বাগনান থেকে মোটরবাইকে পূর্ণচন্দ্র সেখানে হাজির হন। ব্যক্তিগত গাড়িতে আরও তিনজন সহযোগীকে নিয়ে সোমনাথ সিদ্ধায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে পূর্ণচন্দ্রের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সোমনাথ ও তার সহযোগীরা পূর্ণচন্দ্রকে মারধর করে গাড়িতে তুলে কোলাঘাটের দিকে রওনা দেন। ওই সময় পাঁশকুড়া থানার পুলিশ তাঁদের পিছু ধাওয়া করেছিল। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পর সোমনাথেরা ইউটার্ন নিয়ে ফের পাঁশকুড়ার দিকে
চলে এসেছিল।

পুলিশ সূত্রের খবর, পূর্ণচন্দ্রকে সোমনাথ আটবেড়িয়ায় নিজের দোকানের দোতলায় আটকে সারারাত তাঁকে মারধর করে। অভিযোগ, পূর্ণচন্দ্রের কাছে থাকা দু’লক্ষ টাকা এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। বুধবার সকালে পুলিশ ওই দোকান থেকে পূর্ণচন্দ্রকে উদ্ধার করে এবং তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে সোমনাথকে গ্রেফতার করে।

পূর্ণচন্দ্রকে অপহরণ করতে ব্যবহৃত গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সোমনাথকে তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। পাঁশকুড়া থানার আইসি আশিস মজুমদার বলেন, ‘‘একজন মহিলার সঙ্গে দু'জন বিবাহ বহিভূর্ত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তার জেরেই কাণ্ড। অপহরণ ও মারধরের সময় সোমনাথের সঙ্গে আরও তিনজন ছিল। সোমনাথকে হেফাজতে নিয়ে বাকিদেরও খুঁজে বের করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন