দুর্ঘটনা ঠেকানোই লক্ষ্য

চালকদের চোখ পরীক্ষা করছে পুলিশ

 গাড়ির গতি পরীক্ষা, জাতীয় সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিকে ‘ব্ল্যাক স্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করা, হেলমেট ছাড়া পাম্পে পেট্রোল না দেওয়া, ব্রিদ অ্যানালাইজার যন্ত্রের মাধ্যমে চালক মদ্যপ কিনা পরীক্ষা করা— ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ কর্মসূচিতে এমন নানা কর্মসূচিই নিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:১১
Share:

যাচাই: চলছে চালকদের চক্ষু পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র

গাড়ির গতি পরীক্ষা, জাতীয় সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিকে ‘ব্ল্যাক স্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করা, হেলমেট ছাড়া পাম্পে পেট্রোল না দেওয়া, ব্রিদ অ্যানালাইজার যন্ত্রের মাধ্যমে চালক মদ্যপ কিনা পরীক্ষা করা— ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ কর্মসূচিতে এমন নানা কর্মসূচিই নিয়েছে পুলিশ। এ বার পুলিশের উদ্যোগে গাড়ি চালকদের চোখ পরীক্ষা শুরু হল পশ্চিম মেদিনীপুরে। চোখ পরীক্ষার পাশাপাশি প্রয়োজন অনুযায়ী চশমা, ওষুধপত্রও গাড়ি চালকদের দেওয়া হবে। ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাকেন্দ্র থেকেই চলবে এই কর্মসূচি।

Advertisement

গত রবিবার দাসপুর থানা থেকেই জেলা পুলিশের এই নয়া উদ্যোগের সূচনা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “দুঘর্টনা কমাতেই এই উদ্যোগ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী চক্ষু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে চালকদের দৃষ্টিশক্তি জানার চেষ্টা করছি। দাসপুর দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ক্রমে জেলার সব থানা এলাকাতেই এই ব্যবস্থা হবে।”

জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, জাতীয় সড়ক হোক বা রাজ্য সড়ক, সব রাস্তাতেই গাড়ির সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। বাড়ছে দুঘর্টনাও। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট গাড়ি চালকদের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হওয়ায় দুঘর্টনা ঘটেছে। বেশিরভাগ চালকেরই যা আর্থিক সামর্থ্য, তাতে বড় অসুখ না করলে চোখের সমস্যা তাঁরা গুরুত্ব দেন না। অনেক সময় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সুযোগও থাকে না। বিহারের বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা গাড়ি চালক ইন্দ্রদেব যাদব যেমন মানলেন, “মাসে কুড়ি দিন গাড়িতেই থাকি। বাড়িতে গেলেও সংসারের নানা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ি। তাই ইচ্ছে থাকলেও বহু বছর চোখ দেখানো হয়নি।’’ দাসপুর থানার কর্মসূচিতে চোখ পরীক্ষা করিয়েছেন ইন্দ্রদেব। চশমা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।

Advertisement

জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, দিনের বেলায় রাস্তায় লরি, ট্রাক-সহ বিভিন্ন যানবাহনকে দাঁড় করিয়ে চালকদের চক্ষু পরীক্ষা করা হবে। প্রাথমিক ভাবে লরি ও ট্রাক চালকদের চিকিৎসাতেই জোর দেওয়া হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাকেন্দ্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ওষুধ এবং চোখ পরীক্ষার যন্ত্রপাতি থাকছে। চশমার প্রয়োজন হলে পুলিশই ব্যবস্থা করে দিবে। এর জন্য চালকদের কোনও টাকা দিতে হবে না।

উদ্যোগের পাশে রয়েছেন গাড়ি চালক ও মালিকরা। ঘাটাল-চন্দ্রকোনা ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শেখ তনুজউদ্দিন খান বলেন, ‘‘পুলিশের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। সাহায্য চাইলে আমরাও পাশে থাকব।’’ পুলিশের আশা, চালকদের দৃষ্টিশক্তি ঠিকঠাক থাকলে ও বেপরোয়া গাড়ি চলাচলে রাশ টানতে পারলে কমবে দুঘর্টনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন