নন্দকুমারের কামারাদা বাজারে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিজস্ব চিত্র
নিষেধাজ্ঞা ছিল শীর্ষ নেতৃত্বের। ছিল না পুলিশ-প্রশাসনেরও অনুমতি। সে সব কিছুর তোয়াক্কা না করেই বুধবার সকালে নন্দকুমারের কামারদা বাজারে রামনবমী উপলক্ষে র্যা লি করতে কয়েকশো মোটরসাইকেল এবং টোটো নিয়ে হাজির হল বিজেপি প্রভাবিত সংগঠন ‘মিশন মোদী’। শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে ওই কর্মসূচি থেকে বিরত থাকেন সংগঠনের সদস্যেরা।
শুধু এই একটি ঘটনা নয়। প্রত্যক্ষভাবে বিজেপি কোনও এ দিন কোনও শোভাযাত্রার আয়োজন না করলেও ওই দলের নেতৃত্বের সঙ্গে যুক্ত থাকা একাধিক অরাজনৈতিক সংগঠন শোভাযাত্রা করার চেষ্টা করছে। তবে সব ক্ষেত্রেই পুলিশ তাদের বাধা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে কামারদা বাজারে জমায়েত হন ‘মিশন মোদী’র সদস্যেরা। আনা হয় শতাধিক মোটরসাইকেল এবং ৫০টির বেশি টোটো। সেখানে ছিলেন বিজেপির জেলা (তমলুক) সহ-সভাপতি জিমুতকান্তি মাইতি, জেলা কমিটি’র সদস্য চন্দন বারিক-সহ ব্লক নেতৃত্ব। ওই সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব বক্তৃতা করার পরে তাঁদের শোভাযাত্রা কামারদা বাজার থেকে ব্লকে ঘোরার কথা ছিল। খবর পেয়ে সেখানে যান নন্দকুমার থানার ওসি-সহ পুলিশ আধিকারিকেরা। তারা শোভযাত্রা বন্ধ করে।
দল, পুলিশের এত নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শোভাযাত্রার চেষ্টা করেছিলেন কেন?
সেই সদুত্তর মেলেনি বিজেপি নেতা জিমুতকান্তি মাইতির কাছে। তবে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশে নিষেধ করার পরেই আমরা ওই কর্মসূচি বাতিল করেছি।’’
নন্দকুমার হাইস্কুল ময়দানে ‘হিন্দু নাগরিক মঞ্চ’ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন শোভাযাত্রার করার চেষ্টা করে। এই সংগঠনের সভাপতি হিসাবে রয়েছেন বিজেপি নেতা সুকুমার বেরা। সকালে রামনবমী উপলক্ষে পুজো ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়। তবে বিকেলে শোভযাত্রা বের করা প্রস্তুতি নেওয়ার সময়েই নন্দকুমার থানার পুলিশ গিয়ে তাতে বাধা দেয়। যদিও সুকুমার বলছেন, ‘‘প্রতিমা বিসর্জনের জন্য শোভযাত্রা করার জন্য কিছুজন প্রস্তুতি নিয়েছিল। পুলিশ নিষেধ করায় তা বাতিল করা হয়েছে।’’
এদিন বিজেপি প্রভাবিত বিভিন্ন সংগঠন তমলুক শহরে মোট ৬টি জায়গায় রামনবমী উদযাপন করে। আবার তৃণমূল নেতা তথা তমলুক পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়ের উদ্যোগে এদিন তমলুক শহরের রাজময়দানে পুজো ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়। তবে এগুলিতে কোথাও শোভযাত্রা করা হয়নি।
এদিন কাঁথিতে তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জে’র পাশেই প্রথমবার রামনবমী উৎসব পালন করল ক্লাব নান্দনিক। যার সম্পাদক হলেন বিজেপি নেতা সৌমেন্দু অধিকারী। সেখানে পুজো, যজ্ঞ, এবং ভোজনের আয়োজন করা হয়। প্রায় হাজার খানেক লোক আমন্ত্রিত ছিলেন। অভিযোগ, সেখানে শারীরিক দূরত্ববিধি বা অধিকাংশকে মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। পরা ছিল না। শারীরিক দূরত্ব বৃদ্ধি ও সেরকম মানা হয়নি। অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অসীম মিশ্র, প্রাক্তন জেলা সভাপতি সোমনাথ রায়কে।
পৃথক রামনবমী উৎসব আয়োজন করেছিল রাজ্যের শাসকদল। কাঁথি শহরের রাজাবাজারে প্রাক্তন কাউন্সিলার সুবল মান্নার বাড়ির সামনে একটি পুজো হয়। সেখানেও ছিল ভোজ সভা। দু’টি জায়গায় ভোজে ভিড় হলেও কোনও পক্ষই এ দিন শোভাযাত্রা করার চেষ্টা করেনি কাঁথিতে।
শিল্পশহর হলদিয়ায় এবার বেড়েছে রাম পুজোর সংখ্যা। তবে পুজো কমিটির তরফে আয়োজিত পদযাত্রা প্রশাসনের নির্দেশে বাতিল করা হয়েছে। নন্দীগ্রামে জানকীনাথ মন্দিরেও রামনবমীর পুজো হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে শোভাযাত্রা।