দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
এ বার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নামে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার কেশিয়াড়ি থানায় এই মামলা হয়।
বুধবার কেশিয়াড়ির জগন্নাথ মন্দির ময়দানের সভায় বক্তৃতা করেছিলেন দিলীপ। তাঁর বক্তব্য আক্রমণাত্মক ও উস্কানিমূলক ছিল বলেই দাবি পুলিশের। তৃণমূল ও পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উত্তেজনা ও প্ররোচনামূলক মন্তব্য করেছিলেন। প্রকাশ্য সভায় পুলিশের উর্দি খুলে মারধরের কথাও বলেন দিলীপ। পুলিশ সূত্রে খবর ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫, ৫০৬ ও ১২০(বি) ধারায় বিজেপির কয়েকজন কর্মী ও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নামে মামলা রুজু হয়েছে।
মামলার বিষয়ে শুক্রবার দিলীপ বলেন, ‘‘আমার উপর একাধিক আক্রমণ হয়েছে। পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। কর্মী খুন হচ্ছেন। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অথচ বক্তৃতায় কী বললাম, তার জন্য মামলা হয়ে গেল। যা বলার আদালতে বলব।’’
বুধবার কেশিয়াড়ি উত্তর ও দক্ষিণ মণ্ডলের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছিল বিজেপি। সমাবেশ থেকে দ্রুত পঞ্চায়েত সমিতি গঠন ও গণতন্ত্র রক্ষার দাবি, দলীয় নেতা- কর্মীদের উপর পুলিশি হেনস্থার প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। সেই সভায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘‘কোনও পুলিশ যদি বিজেপির কোনও কর্মীর গায়ে হাত দেয়, বিজেপির কোনও সদস্যকে ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে যোগদানে চাপ দেয় তাহলে ইউনিফর্ম তো খুলবই, তার সঙ্গে পিঠের চামড়াটাও খুলে নেব। দেখি পুলিশের কত বড় আইন।’’ শুধু পুলিশ নয়, ছিল তৃণমূলকেও মারধরের নিদান। গত ২৮ অগস্টে গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের দিনের কথা উল্লেখ করে পঞ্চায়েত সমিতি ভাঙানোর বিষয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতি ভাঙাতে আসবেন না। তৃণমূলের লোকের দম থাকলে আসুন, তার আমরা হিসাব দেব। যেমন পঞ্চায়েতের দিন গাড়ি উল্টে কুটেছি, রোজ কুটব সকাল সন্ধ্যা-বলে দিচ্ছি।’’
মামলা প্রসঙ্গে কেশিয়াড়ি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি পবিত্র শীট বলেন, ‘‘প্রকাশ্য সভায় পুলিশকে মারধর, এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করতে উস্কানিমূলক মন্তব্য করায় পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন।’’ আর খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশীর কথায়, “জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। আমরা এই মামলায় তদন্ত চালাচ্ছি। তার পরে যা পদক্ষেপ করার করা হবে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘ওই এলাকায় এমনিতে আইনশৃঙ্খলায় সমস্যা রয়েছে। তার উপরে পুলিশকে আক্রমণ ও উস্কানিমূলক মন্তব্য করার কারণেই আমরা এই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছি।”