শিশু নিখোঁজে ষড়যন্ত্রের নালিশ

প্রতীকবাবু ও তাঁর স্ত্রী পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী অঞ্জনাদেবী নিঃসন্তান ছিলেন। সেই কারণে ২০১৪ সালে সরকারি ভাবে তাঁরা মানিকপাড়ার একটি অনাথ আশ্রম থেকে স্তুতিকে দত্তক নেন। অভিযোগ, ২০১৫ সালে মেদিনীপুরের একটি নার্সিংহোমে গল ব্লাডার স্টোন অপারেশন করানোর পরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যান অঞ্জনাদেবী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০৫
Share:

স্তুতি বর্মন। নিজস্ব চিত্র

শিশুকন্যার নিখোঁজ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল ঝাড়গ্রামে। স্তুতি বর্মন ওরফে কুহু নামে চার বছরের ওই শিশুটি শুক্রবার দুপুরে শহরের ঘোড়াধরা এলাকায় বাড়ির উঠোন থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় বলে পরিজনেদের দাবি। শুক্রবার রাতে এ ব্যাপারে ঝাড়গ্রাম থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন স্তুতির বাবা প্রতীক বর্মন। প্রতীকবাবুর আদিবাড়ি নয়াগ্রামে।

Advertisement

প্রতীকবাবু ও তাঁর স্ত্রী পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী অঞ্জনাদেবী নিঃসন্তান ছিলেন। সেই কারণে ২০১৪ সালে সরকারি ভাবে তাঁরা মানিকপাড়ার একটি অনাথ আশ্রম থেকে স্তুতিকে দত্তক নেন। অভিযোগ, ২০১৫ সালে মেদিনীপুরের একটি নার্সিংহোমে গল ব্লাডার স্টোন অপারেশন করানোর পরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যান অঞ্জনাদেবী। পরে ২০১৫ সালের মে মাসে কলকাতার হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মেদিনীপুরের নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে মেদিনীপুর ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা দায়ের করেন প্রতীকবাবু। সেই মামলা এখনও চলছে।

অন্য দিকে, শিশুরক্ষা আইনের দত্তক সংক্রান্ত নিয়মাবলী অনুযায়ী, একক ভাবে পালকপিতা শিশুকন্যাকে দত্তক নিতে পারেন না। পালিকা মায়ের মৃত্যু হওয়ায় আইন অনুযায়ী স্তুতিকে অনাথ আশ্রমে ফিরিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ শুরু হয়। এর বিরুদ্ধে মেদিনীপুর জেলা আদালতে আবেদন জানান প্রতীকবাবু। বিষয়টি এখনও আদালতের বিবেচনাধীন। ফলে, স্তুতির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে ঘিরে নানা রকম জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রতীকবাবুর অবশ্য দাবি, কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে তাঁর মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। মানিকপাড়ার অনাথ আশ্রমটির সম্পাদক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুক্রবার সন্ধ্যায় শিশুটি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে বলে খবর দেন প্রতীকবাবু। জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিককে বিষয়টি জানিয়েছি।”

Advertisement

স্ত্রীর মৃত্যুর পরে মেয়েকে নিয়ে নয়াগ্রামেই থাকতেন প্রতীকবাবু। ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরায় থাকেন প্রতীকবাবুর ভাই ও বিধবা মা। প্রতীকবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, গত ১০ অক্টোবর মেয়েকে নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে বাড়ির উঠোনে খেলা করছিল স্তুতি। স্নান করাতে গিয়ে স্তুতির আর খোঁজ পাননি প্রতীকবাবু। খোঁজাখুঁজি করেও স্তুতির খোঁজ মেলেনি। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় দমকল কর্মীদের দিয়ে এলাকায় পাতকুয়ো গুলিতে কাঁটা নামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু শিশুটির খোঁজ মেলেনি। প্রতীকবাবুর দাবি, শনিবার অচেনা নম্বর থেকে তাঁর মোবাইলে ফোন আসে। কেন শিশুটিকে নির্দিষ্ট ডেরায় পৌঁছে দেওয়া হয়নি তা জানতে চাওয়া হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। তবে মুক্তিপণ চেয়ে কোনও ফোন পাননি প্রতীকবাবু। এ বিষয়ে ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। শিশুটির হদিস পাওয়ার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement