সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের স্ত্রী ঊষা মিশ্রের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তে ফের দুই মেদিনীপুরে এলেন দুর্নীতি দমন শাখার প্রতিনিধিরা।
বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা দু’টি দলে ভাগ হয়ে বেলদা এবং দিঘায় যান। সকালে দুই আধিকারিক প্রথমে বেলদা থানায় আসেন। এক পুলিশ কর্মীকে নিয়ে তাঁরা বেলদা বাজারে যান। কিন্তু এ দিন দোকান বন্ধ থাকায় তাঁরা খাকুরদা বাজারে যান। দুপুর ২টো বেজে যাওয়ায় সেখানেও অধিকাংশ দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
গত ১৯ মার্চ রাতে খাকুরদায় ঊষা মিশ্রের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসে হানা দেয় দুর্নীতি দমন দলের সদস্যরা। অফিস থেকে নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, যৌন কর্মীদের মধ্যে এডস্ সচেতনতা প্রকল্পের নানা সরঞ্জাম বেলদা ও খাকুরদা বাজারের বিভিন্ন দোকান থেকে কেনা হয়েছিল। সেই বিষয়ে খোঁজ নিতেই এ দিন ওই দু’টি বাজারে যান তদন্তকারীরা।
সরঞ্জাম কেনায় গরমিলের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রকল্পের ডিরেক্টর কার্তিক আচার্য বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়। খাকুরদায় সংস্থার প্রধান কার্যালয় হওয়ায় বেলদা ও খাকুরদা বাজার থেকে সরঞ্জাম কেনা হয়েছিল। দিঘা ও রামনগর থেকেও কিছু সরঞ্জাম কেনা হয়।” তাঁর দাবি, প্রকল্পের কাজের পর সরঞ্জামগুলি পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কাগজপত্রও তাঁদের কাছে রয়েছে। ঊষাদেবীরও বক্তব্য, “সব সরঞ্জাম কেনার বিষয় আমি দেখতাম না। তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না।”
খাকুরদা থেকে দুর্নীতি দমন দলের আধিকারিকরা যান হেমচন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধানগরে। বছর তিনেক আগে এই গ্রামে ঊষাদেবীর ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের যৌথ উদ্যোগে এক স্বাস্থ্য শিবির হয়েছিল। তার ব্যাপারে খোঁজ নিতেই এ দিন তদন্তকারীরা রাধানগরে যান বলে খবর। যদিও হেমচন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লক্ষ্মী মাণ্ডি বলেন, “দুপুর ১টা পর্যন্ত পঞ্চায়েত অফিসে ছিলাম। আমার কাছে কেউ আসেননি। এ বিষয়েও কিছু জানিনা।”
অন্য দিকে, দুই আধিকারিক এ দিন বিকেলে পুরনো দিঘার ‘কোকোলা হাউস’-এ গিয়ে ঊষাদেবীর ভগবতী নারীকল্যাণ সমিতির কাজকর্ম নিয়ে খোঁজখবর নেন। এখানেই ঘর ভাড়া নিয়ে সংস্থার দিঘা শাখার কাজকর্ম চলত। কোকোলা হাউসের মালিক রঙ্গীন দে বলেন, “দুর্নীতি দমন শাখার অফিসাররা ঊষাদেবীর সংস্থার কাজকর্ম ও অফিস সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নেন।” দিঘা ও আশপাশের এলাকায় যৌনকর্মীদের মধ্যে এডস্ সচেতনতায় কাজ করত ঊষাদেবীর সংস্থা। কোকোলা হাউসে দু’টি ঘর ভাড়া নিয়ে সংস্থার কাজকর্ম চলত। প্রথমে মাসে ভাড়া ছিল ৭ হাজার টাকা। পরে তা বেড়ে ৮ হাজার টাকা হয়। ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত সংস্থার কাজকর্ম চলেছিল।